লিনেকার বিতর্কে সঙ্কটে বিবিসি, দর্শকদের কাছে ক্ষমা চাইলেন মহাপরিচালক

Looks like you've blocked notifications!
বিতর্কে বিবিসি । ছবি:রয়টার্স

ইংলিশ ফুটবল লেজেন্ড গ্যারি লিনেকার বিতর্কে চরম সঙ্কটে পড়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি। এই বিতর্কে আস্থা ফেরাতে দর্শকদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন বিবিসি মহাপরিচালক টিম ডেভি। খবর রয়টার্সের।

সম্প্রতি ব্রিটিশ সরকারের একটি বিতর্কিত অভিবাসন নীতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা করেছিলেন ইংল্যান্ডের সাবেক ফুটবল অধিনায়ক লিনেকার। এরপরই শুরু হয় বিতর্ক। মন্তব্যের জেরে রাতারাতি বিবিসির ‘ম্যাচ অব দ্য ডে’ অনুষ্ঠান সঞ্চালকের চাকরি হারান তিনি। ১৯৯৯ সাল থেকে বিবিসির জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘ম্যাচ অব দ্য ডে’ উপস্থাপনা করতেন ইংলিশ এই তারকা। অন্যদিকে লিনেকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ‘ম্যাচ অব দ্য ডে’-র অন্য উপস্থাপক ও ভাষ্যকাররা ওয়াকআউট করলে শনিবার (১১ মার্চ) নিয়মিত এ প্রোগ্রামটির সম্প্রচারে ব্যাঘাত ঘটে। 

উপস্থাপক না থাকায় শনিবার রাতে বিবিসি ওয়ানের ‘ম্যাচ অব দ্য ডে’ ধারাভাষ্য ছাড়াই সম্প্রচারিত হয়।  প্রোগ্রামটি তার বিখ্যাত থিম টিউন এবং ওপেনিং ক্রেডিট ছাড়াই সম্প্রচার করা হয়। নির্ধারিত সময়ে ‘ম্যাচ অব দ্য ডে’ শুরু হলেও সেটি চলে মাত্র ২০ মিনিট। ম্যাচ বিশ্লেষণ নিয়ে হাজির হননি অ্যালান শিয়ারার বা ইয়ান রাইট। 

তবে বিবিসির তরফ থেকে জানানো হয়, গ্যারি লিনেকার প্রতিষ্ঠানের নির্দেশিকা ভঙ্গ করেছেন। কোনও রাজনৈতিক বিতর্ক বা দল সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো পক্ষ নেওয়া তার দূরে থাকা উচিত বলেও প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিয়ে এই ফুটবল বোদ্ধার সঙ্গে স্পষ্ট চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত ‘ম্যাচ অব দ্য ডে’র সঞ্চালন‍ায় ফিরতে পারবেন না তিনি বলেও জানায় সংস্থাটি। 

এ ঘটনাকে বিবিসির জন্য একটি ‘কঠিন দিন’ উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান টিম ডেভি জানিয়েছেন, ‘পরিস্থিতি সমাধানের জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। গ্যারিকে আবার সম্প্রচারে ফিরিয়ে আনাই হবে আমার জন্য সাফল্য এবং আমি দুঃখিত যে দর্শকদের আমরা যে বিশ্বমানের স্পোর্টস কভারেজ দেই, তা আজ দিতে পারিনি।’

তবে সরকারের চাপে লিনেকারকে বরখাস্ত করার কথাও অস্বীকার করেছেন টিম ডেভি। 

সরকারবিরোধী টুইটের জন্য ডাউনিং স্ট্রিট ও মন্ত্রীদের চাপের কাছে বিবিসির কর্মকর্তারা মাথা নত করেছেন, বিরোধী দলগুলোর এমন অভিযোগের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার প্রতিষ্ঠান কোনো রাজনৈতিক দলকে খুশি করতে কাজ করে না। 

শুক্রবার তাকে বরখাস্ত করার পর বিবিসির নিরপেক্ষতা, সরকারের অভিবাসন নীতি ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে উঠে। লিনেকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে অনেকেই অনুষ্ঠান না করার ও চাকরি ছাড়ার ঘোষণা দিলে কেবল ‘ম্যাচ অব দ্য ডে’-ই নয়, আরও অনেক অনুষ্ঠানও বিপাকে পড়ে। 

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক লিনেকারকে ‘মেধাবী উপস্থাপক’ অ্যাখ্যা দিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিবিসির অভ্যন্তরীণ ঝামেলায় সরকারের হাত নেই। সরকারের সংস্কৃতি, গণমাধ্যম ও খেলাধুলা দপ্তরের এক মুখপাত্রও ‘বিষয়টি একান্তই বিবিসির’ বলে মন্তব্য করেছেন।

শনিবার বিবিসির সাবেক মহাপরিচালক গ্রেগ ডাইকও লিনেকার বিতর্কে ব্রিটিশ গণমাধ্যমটির সমালোচনা করেছেন। বলেছেন, এর মাধ্যমে বিবিসি নিজেই তার ‘বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষুণ্ন করেছে’।