শ্রীলঙ্কা ‘দেউলিয়া’ হয়ে গেছে : প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহে
ইতিহাসের ভয়াবহতম অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা ‘দেউলিয়া’ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।
দেশটির লাখ লাখ মানুষকে এখন একটু খাবার, ওষুধ ও জ্বলানি পেতে রীতিমত লড়াই করতে হচ্ছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে শ্রীলঙ্কা সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ পাওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু এ মুহূর্তে ঋণ পাওয়া অত্যন্ত কঠিন বলেই মনে করছেন বিক্রমাসিংহে। খবর সিএনএনের।
পার্লামেন্টে মঙ্গলবার এ বিষয়ে বিক্রমাসিংহে বলেন, একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে নয় বরং একটি দেউলিয়া দেশ হিসেবে তারা আইএমএফ এর সঙ্গে ঋণ চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছেন।
‘আমরা এখন একটি দেউলিয়া দেশ হিসেবে আইএমএফ-র সঙ্গে দর কষাকষি করছি। ফলে অতীতের আলোচনার তুলনায় এখন আমাদের অনেক বেশি কঠিন এবং জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
‘যেহেতু আমাদের দেশের দেউলিয়া অবস্থা তাই আমাদের ঋণের স্থায়িত্বের জন্য আলাদাভাবে আইএমএফর কছে একটি পরিকল্পনা জমা দিতে হবে। যখন তারা আমাদের জমা দেওয়া পরিকল্পনায় সন্তুষ্ট হতে পারবে শুধুমাত্র তখন আমরা স্টাফ পর্যায়ে একটি চুক্তিতে উপনীত হতে পারব। এটা সরাসরি কোনো প্রক্রিয়া নয়,’ বলেন বিক্রমাসিংহে।
স্বাধীনতার পর সবচেয়ে মারাত্মক আর্থিক সংকেট পড়া শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক রিজার্ভ বলে আর কিছু নেই। তাই দেশটি খাবার, ওষুধ ও জ্বালানির মত অতি জরুরি আমদানি প্রয়োজন মেটাতে পারছে না।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। জরুরি সেবার জন্যও জ্বালানি পাওয়া যাচ্ছে না। বাণিজ্যিক রাজধানী কলম্বোসহ বড় বড় নগরীতে একটু জ্বালানি তেলের জন্য মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকছে।
কখনও কখনও পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। গত রোববার দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী কাঞ্চানা উইজেসেকেরা বলেছিলেন, দেশটির হাতে আর একদিনের কম জ্বালানি আছে।
তিনি বলেছিলেন, ‘জ্বালানি ও খাবারের কথা বলতে গেলে, আমাদের দেশকে কোনো না কোনো সময়ে এই সংকটে পড়তেই হতো। কারণ, জ্বালানি দুর্লভ হয়ে গেছে এবং খাবারের দাম অনেক বেড়ে গেছে।’