সাবেক মিস ইংল্যান্ড জেনিফারের ২০ বছরের জেল হতে পারে

Looks like you've blocked notifications!
জেনিফার ইয়ং। ছবি : সাইমন অ্যাশটন

মেক্সিকোতে মাদক চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক মিস ইংল্যান্ড জেনিফার ইয়াংয়ের ২০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। গত বছর দেশটিতে আড়াই লাখ পাউন্ডের কেটামিন পাচারের সন্দেহে গ্রেপ্তার হন তিনি। খবর মেট্রোর।

জেনিফার ইয়াংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত বছর নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম থেকে মেক্সিকোর কানকুন শহরে যাওয়ার সময় ফ্লাইটে তার স্যুটকেসে বিশেষভাবে লুকিয়ে রাখা প্যাকেট ও বোতলে ১৩ কেজি কেটামিন পাওয়া গেছে।

ওই সময় মেক্সিকোর পুলিশ এক টুইট বার্তায় জানায়, ‘কানকুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসা এক বিদেশি নাগরিকের লাগেজের মধ্যে লুকানো বেশ কয়েক প্যাকেটে কোকেন সদৃশ মাদক পেয়েছেন ন্যাশনাল গার্ড ও বিমানবন্দরের কর্মীরা।’

কানকুনের একটি জনাকীর্ণ কারাগারে কয়েক মাস রাখার পর জেনিফার ইয়ংকে গত ফেব্রুয়ারিতে মেক্সিকো সিটির কাছাকাছি একটি জেলে স্থানান্তর করা হয়। ৩৩ বছর বয়সী এই মডেল ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে পরিবারকে নিজের গ্রেপ্তারের বিষয়ে অন্ধকারে রেখেছিলেন। জেনিফার ইয়ংয়ের মা অ্যাঞ্জেলা জানতেন, তিনি দেশটিতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অবশেষে মাত্র পাঁচ সপ্তাহ আগে সত্য জানতে পারেন অ্যাঞ্জেলা, যখন তার একমাত্র মেয়ে (জেনিফার) তাকে ফোন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে পারেনি।

সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল অনলাইনকে অ্যাঞ্জেলা বলেন, ‘আমি এখনও হতবাক। আমি জানতাম, জেনি মেক্সিকোতে আছে, কিন্তু আমি ভেবেছিলাম সে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমি মাত্রই জেনেছি, জেনি কারাগারে আছে।’

জেনিফারের মা আরও বলেন, ‘আমার জন্মদিন মার্চে, পৃথিবীর যেখানেই থাকুক- জেনি আমাকে ফোন করে। কিন্তু এবার সে যোগাযোগ করেনি। এরপর আমি চিন্তা করতে শুরু করি।’

অ্যাঞ্জেলা আরও বলেন, ‘তারপর ওর (জেনিফার) বন্ধুর কাছ থেকে একটা মেসেজ পেলাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম- জেনি কোথায়? অনেক মেসেজ দেওয়ার পর অবশেষে তার বন্ধু আমাকে জানায়, সে জেলে আছে। আমি এটা বিশ্বাস করতে পারিনি।’

জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করেন জেনিফার। তার মা ব্রিটিশ ও বাবা জার্মান। যুক্তরাজ্যের ডার্বি শহরে বেড়ে ওঠেন তিনি। ১৯ বছর বয়সে নিজের শহর ছেড়ে যাওয়ার পর জীবনের বেশিরভাগ সময় তিনি মডেল এবং ট্যুর গাইড হিসেবে বিদেশে কাজ করেন। 

অ্যাঞ্জেলা আরও বলেন, ‘গত বুধবার (মেক্সিকোর) ব্রিটিশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাকে (জেনিফার) দেখতে গিয়েছিল। সে এখন ভালো আছে, কারাগারে তার নিজের একটা সেল আছে। এটা আগের থেকে অনেক ভালো।’

বন্দিদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়। এ সময় আত্মীয়-স্বজনরা খাবার এবং অন্যান্য জিনিস নিয়ে যান।

অ্যাঞ্জেলা আরও বলেন, ‘জেনি জানিয়েছে—সে দিনে তিনবার খাবার পাচ্ছে, তবে তা খুব অল্প। সে আইনজীবীর অপেক্ষায় আছে। সে আগেও আমাকে ফোন করেছিল, কিন্তু জানায়নি সে সমস্যায় আছে।’

জেনিফারের মা আরও বলেন, ‘সে আমাকে আগেও জেল থেকে ফোন করেছে। কিন্তু কথা বলার জন্য মাত্র পাঁচ মিনিট সময় পায়। আমি জানি না আর কেউ কথা শুনে কি না? তবে সে কী ঘটেছে ওই বিষয়ে কথা বলেনি। সে বলত—আমি তোমাকে ভালোবাসি, শিগগিরই তোমার সঙ্গে কথা হবে।’

মেক্সিকোতে সবচেয়ে গুরুতর অপরাধগুলোর একটি হলো মাদক চোরাচালান। এর দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে জেনিফারের ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

মেক্সিকোতে যুক্তরাজ্যের দূতাবাস কানকুনে একজন ব্রিটিশ নাগরিক ও ব্রিটেনে থাকা তার পরিবারকে সহায়তা দিচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র।