সুয়েজ খালে আটকে থাকা জাহাজটি অবশেষে মুক্ত

Looks like you've blocked notifications!
বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য মহা গুরুত্বপূর্ণ মিসরের সুয়েজ খালে আড়াআড়িভাবে আটকা পড়া কনটেইনারবাহী জাহাজ এমভি এভার গিভেন অবশেষে মুক্ত হয়েছে। ছবি : সংগৃহীত

বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য মহা গুরুত্বপূর্ণ মিসরের সুয়েজ খালে আড়াআড়িভাবে আটকা পড়া কনটেইনারবাহী জাহাজ এমভি এভার গিভেন অবশেষে মুক্ত হয়েছে।

জাহাজটি খালে আড়াআড়ি আটকে থাকায় লোহিত সাগরের সঙ্গে ভূমধ্যসাগরকে যুক্ত করা বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত এই বাণিজ্য পথ বন্ধ হয়ে ছিল প্রায় এক সপ্তাহ ধরে। ফলে তিনশর বেশি জাহাজের জট তৈরি হয় দুই প্রান্তে, তৈরি হয় বিপুল আর্থিক ক্ষতির উদ্বেগ।

সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, শনিবার ভরা জোয়ারেও এমভি এভার গিভেনকে সরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন উদ্ধারকর্মীরা। অবশেষে স্থানীয় সময় সোমবার ভোররাতে সুখবর দেয় জাহাজটি সরানোর কাজে থাকা ইঞ্চকেপ শিপিং সার্ভিসেস।

টুইটারে এক বার্তায় তারা জানায়, খালে আটকে যাওয়া ৪০০ মিটার দীর্ঘ এভার গিভেনকে সফলভাবে ভাসিয়ে তোলা সম্ভব হয়েছে এবং জাহাজটি এখন নিরাপদে ভাসছে।

এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে পণ্য পরিবহণের কাজ করা তাইওয়ানের এম ভি এভার গিভেন জাহাজটি গত মঙ্গলবার হঠাৎ একদিকে হেলে আটকে গিয়েছিল সুয়েজ খালে। যার জেরে আটকে পড়ে ওই রুটের একাধিক পণ্য পরিবহণকারী জাহাজ। যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছিল পণ্য ও তেল সরবরাহে।

সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ৪০০ মিটার লম্বা এবং দুই লাখ টন ওজনের এমভি এভার গিভেন জাহাজটি ভূমধ্যসাগরের দিকে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারায়। তারপর ঘুরে গিয়ে তা আড়াআড়ি আটকে যায়।

ধারণা করা হয়, প্রবল বাতাসের ফলে জাহাজের দিক বিচ্যুত হয়। তারপর তা ঘুরে যায়। জাহাজের তলা খালের নিচে কাদামাটির মধ্যে আটকে গিয়েছিল।

ড্রেজিং-শিপ এনে, টাগ বোট লাগিয়ে, জোয়ারের সময় বেড়ে যাওয়া জল এবং উঁচু ঢেউ কাজে লাগিয়ে আটকাপড়া জাহাজটি সরানোর চেষ্টা চলছিল।

এভার গিভেন আটকে যাওয়ায় ভূমধ্যসাগর বা লোহিত সাগর কোনো দিক থেকেই জাহাজ আসা-যাওয়া করতে পারছিল না। ফলে সুয়েজ খালে প্রচুর জাহাজ আটকে পড়েছে। বেশ কয়েকটি পশুবাহী জাহাজও আটকে পড়েছে। এসব জাহাজে হাজার হাজার পশু রয়েছে। কেবল রোমানিয়ারই ১৩টি পশুবাহী জাহাজ আটকে পড়েছে। মিসর জানিয়েছে, ওই জাহাজে পশু চিকিৎসক, খাবার ও জল পাঠানো হয়েছে।

সুয়েজ খালে চলাচল বন্ধ হওয়ায় বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছে বিশ্ব। প্রতিদিন প্রায় ৬০০ থেকে এক হাজার কোটি ডলার ক্ষতি হচ্ছে। মিসরের প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে এক কোটি ২০ লাখ থেকে এক কোটি ৪০ লাখ ডলার। খাল আটকে যাওয়ায় বিভিন্ন দেশে পণ্য পৌঁছাতে দেরি হবে।

সুয়েজ খালে গত মঙ্গলবার থেকে আড়াআড়িভাবে আটকে থাকা কন্টেইনারবাহী জাহাজটি আজ স্থানীয় সময় সকালে অনেকটা সরানো সম্ভব হয়। ফলে আটকে থাকা শত শত জাহাজ এভার গিভেনকে পেছনে ফেলে গন্তব্যের দিকে দ্রুত যাত্রা শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মেরিন সার্ভিসের গ্লোবাল প্রোভাইডার ইঞ্চকেপ শিপিং টুইটবার্তায় বলেছে, আটকে থাকা এভার গিভেন জাহাজটি সরাতে বা ভাসাতে তারা টাগবোট ও ড্রেজার ব্যবহার করেছে।

আর, ওয়াল স্ট্রিটের এক প্রতিবেদনে সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ওসামা রবি জানিয়েছেন, আটকে থাকা জাহাজটি আংশিকভাবে সরানো সম্ভব হয়েছে।   ইউরোপ-আমেরিকার সঙ্গে এশিয়ার জলপথে যাতায়াত যোগাযোগের বহুল প্রচলিত রুট এই সুয়েজ খাল। এই খালের বাইরে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ অব হোপ দিয়ে ঘুরেও ইউরোপ-আমেরিকায় যেতে পারে জাহাজগুলো।