পুতিনকে ‘বুদ্ধিহীন’ বলা স্টালিনের নাতির লাশ রাস্তায়
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের (বর্তমান রাশিয়া) প্রয়াত নেতা জোসেফ স্টালিনের নাতি ইয়েভগেনি জুগাশভিলির লাশ রাস্তায় পাওয়া গেছে। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক ছিলেন জুগাশভিলি। তিনি পুতিনকে ‘বুদ্ধিহীন’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।
মস্কোর নিজ বাড়ির পাশে জুগাশভিলির লাশ পড়েছিল। প্রাথমিকভাবে তাঁর মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি।
নিজের নামের সঙ্গে স্টালিনের নাম ব্যবহার করতে গর্ববোধ করতেন জুগাশভিলি। জীবদ্দশায় তিনি ২৫ বছর বিভিন্ন সামরিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়িয়েছেন। ১৯৮০-এর দশকে তিনি রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর ভরোশিলভ স্টাফ একাডেমিতে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ছিলেন।
স্টালিনের হাতে কোটি মানুষ খুন হয়েছে বলে অভিযোগ পশ্চিমা দেশগুলো করে, তা তিনি বরাবরই অস্বীকার করতেন। সমালোচকদের চোখে ‘স্বেচ্ছাচারী’ স্টালিনের পক্ষে তাঁকে বারবার আদালতে যেতে হয়।
জুগাশভিলির বাবা ইয়াকভ—স্টালিনের বড় ছেলে। ধারণা করা হয়, ১৯৪৩ সালে জার্মানির সাচসেনহসেন বন্দিশিবিরে (কনসেনট্রেশন ক্যাম্প) তাঁকে হত্যা করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিদের হাতে আটক হয়ে তিনি সেখানে বন্দি ছিলেন।
মাস দুয়েক আগে মস্কোর আদালত স্টালিনের নাতির একটি আবেদন নাকচ করে দেন। কাতিল হত্যাযজ্ঞে ২২ হাজার পোলিশ কর্মকর্তাকে হত্যার যে অভিযোগ স্টালিনের বিরুদ্ধে করা হয়, তা বাতিল করতে সেই আবেদন করেছিলেন জুগাশভিলি। পিতামহকে ‘রক্তপিপাসু মানুষখেকো’ বলার বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন তিনি।
গত বছর জুগাশভিলি আক্ষেপ করে বলেন, ‘আদালতে আমাদের অনিঃশেষ আবেদন, যা আমরা করে চলেছি, মনে হচ্ছে সবই বাতাসে করছি।’ তিনি বলেছিলেন, ‘আজকাল স্টালিনের ব্যাপারে কথা বলার ক্ষেত্রে কারো কাণ্ডজ্ঞান কাজ করে না। কারণ সমাজে একটা সাধারণ ধারণা তৈরি হয়ে গেছে। আর সেটা হলো, স্টালিনই সব কিছুর জন্য দায়ী।’
জুগাশভিলি বলেছিলেন, ‘স্টালিন যদি আর পাঁচ বছর বাঁচতেন, রাশিয়া যে বিপর্যয়ে পড়েছে তা ঠেকানো যেত। কিন্তু স্টালিন চলে গেলেন আর নিকিতা ক্রুশ্চেভ ক্ষমতায় এলেন এবং তিনি অর্থনীতি ধ্বংস করা শুরু করলেন। আর এর ফলে সোভিয়েতের শত্রুরা, যেমন গর্বাচেভ, ইয়েলৎসিন ও পুতিন ক্ষমতায় এলেন।’