সাদ্দাম হোসেনকে জেরা করেছিলেন যিনি

ইরাকের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ২০০৩ সালে মার্কিন বাহিনীর কাছে ধরা পড়েন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের অপরাধ তদন্ত সংস্থার (সিআইএ) কর্মকর্তা জন নিক্সন তথ্য উদঘাটনের জন্য সাদ্দামকে জেরা করেছিলেন।
নিক্সন ১৯৯৮ সালে যখন সিআইএ যোগ দেন তখন থেকেই তিনি সাদ্দামকে নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেন। আর এই কারণেই সাদ্দামকে জেরার করার জন্য তাঁকেই ডাকা হয়।
নিক্সন বলেন, ‘যেখানে একটা কথা প্রচলিত ছিল যে একই চেহারার বেশ কয়েকজন সাদ্দাম আছে। কিন্তু আমি যখন তাঁকে দেখি তখন কোনো সন্দেহ ছিল না, তিনিই ছিলেন সাদ্দাম।’
এই সিআইএ কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘যখন আমি তাঁর সঙ্গে কথা বলা শুরু করি, তখন তিনি এমনভাবে তাকিয়েছিলেন যা দেখে আমার টেবিলে বছরের পর বছর পড়ে থাকা বইয়ের ওপর সাদ্দামের যে মুখ ছিল, ঠিক সেই সাদ্দামের চেহারাই সামনে ভেসে উঠে।’
সাদ্দামকে জেরা করার দায়িত্বে ছিলেন নিক্সন এবং তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি দীর্ঘ সময় ধরে সাদ্দামকে প্রশ্ন করেছিলেন।
জেরা করার সময় সাদ্দাম হোসেনের ‘মানবিক দিক’ দেখেছিলেন নিক্সন। মার্কিন গণমাধ্যমে তাঁকে যেভাবে দেখানো হয়েছিল সাদ্দাম হোসেন ছিলেন তাঁর সম্পূর্ণ বিপরীত বলে জানান নিক্সন। তিনি বলেন, ‘আমি নিজেকে চিমটি কেটেছিলাম যে, আমি বিশ্বের বড় একজন… মানুষকে জেরা করছি। এটা ছিল বিস্ময়কর।’
এই কর্মকতা আরো বলেন, ‘আমি যত মানুষকে জেরা করেছি তার মধ্যে তিনি ছিলেন আমার দেখা একজন দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তি। তিনি চাইলেই চমৎকার, নম্র আচরণ করতেন। এমনকি কৌতুকও করতেন।’ তবে রেগে গেলে সাদ্দাম হোসেন অভদ্র, নিচু মানসিকার হয়ে যান বলে বর্ণনা করেছেন নিক্সন। দুই বা তিনবার এমন হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন নিক্সন।
সিআইএর এ কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘জেরা শুরুর দিকটা খুব বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল, কিন্তু পরের দিকে ক্রমেই সাদ্দাম হোসেন সন্দেহের সৃষ্টি করতে থাকেন। তিনি ছিলেন আমার দেখা অধিক সন্দেহজনক মানুষ। আমার প্রত্যেকটি প্রশ্নের বিপরীতে তাঁর একটি করে প্রশ্ন ছিল।’