স্ত্রীর কথা বলতে গিয়ে কাঁদলেন ওবামা
বিদায়ী ভাষণে স্ত্রী ও সন্তানদের কথা বলতে গিয়ে কাঁদলেন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে নিজ শহর শিকাগোতে বিদায়ী ভাষণ দেন সে দেশের ৪৪তম প্রেসিডেন্ট।
বিদায়ী ভাষণে স্ত্রী মিশেল ওবামা এবং দুই সন্তান মালিয়া ও শাশার কথা বলতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন ওবামা। ভাষণে তিনি তাঁর স্ত্রীকে ‘সেরা বন্ধু’ হিসেবে আখ্যা দেন। এর পর তিনি মিশেলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘তোমার কাজ আমাকে যেমন গর্বিত করেছে, তেমনি গর্বিত করেছে দেশকেও।’
মিশেলকে ধন্যবাদ জানিয়ে ওবামা বলেন, ‘গত ২৫ বছর ধরে তুমি আমার সঙ্গে আছো। তুমি কেবল আমার স্ত্রী আর আমাদের সন্তানের মা নও। তুমি আমার সেরা বন্ধুও বটে।’
‘এই হোয়াইট হাউসে থাকাকালে তুমি তোমার মতো করে সব কাজ সুচারুভাবে সামলেছ। তোমাকে কখনো বলতে হয়নি। তুমি আমার সব কাজের অংশীদারিত্ব নিজের করে নিয়েছ।’
বক্তৃতার এ পর্যায়ে এসে ওবামা আঠারো হাজার দর্শকের সামনে রুমাল বের করে নিজের চোখ মোছেন।
ওবামার বিদায়ী ভাষণের সময় তাঁর পাশে কালো পোশাক পরে বসে ছিলেন ফার্স্ট লেডি মিশেল।
বক্তব্যে দুই মেয়ের কথাও উল্লেখ করেন ওবামা। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়েরা আমার সম্মান ও সুনাম অক্ষুণ্ণ রেখেছে। আজ আমি বলছি, তাদের বাবা হিসেবে আমি গর্বিত।’
এর আগে হলভর্তি দর্শকের সামনে ওবামা বলেন, ‘এখানে আমি শিখেছি যে পরিবর্তন তখনই হয়, যখন সাধারণ মানুষ সম্পৃক্ত হয় এবং একত্র হয়ে এর দাবি জানায়।’
‘আপনাদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আট বছর দায়িত্ব পালন করার পর আমি এখনো এটা বিশ্বাস করি’, বলেন ওবামা।
‘এটা শুধু আমার বিশ্বাস নয়। এটা আমাদের আমেরিকান ধারণার প্রাণ’, যোগ করেন ওবামা।
বক্তব্যের সময় সমর্থকরা ‘আই লাভ ইউ ওবামা’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। এতে বক্তব্যের মাঝেই অনেকবার থামতে হয় ওবামাকে।
ভাষণে গত আট বছরে সম্পন্ন কাজের কথা উল্লেখ করেন ওবামা। সে তালিকায় স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে বৈবাহিক সাম্যের বিষয়গুলো উঠে এসেছে। এ সময় তিনি বলেন, তাঁর অনেক কাজ এখনো বাকি।
বক্তব্যে উত্তরসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিষয়ে আলোচনা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, তাঁর (ট্রাম্প) কাছে ঝামেলাহীনভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চান তিনি।
২০০৮ সালে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ওবামা। এর পর দুই মেয়াদে পার করেছেন আট বছর। ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন তাঁর উত্তরসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্প।