নেসলের ম্যাগিতে সিসার পর দুধে মিলল পোকা
নেসলে ইন্ডিয়ার ইনস্যান্ট ম্যাগি নুডলস নিয়ে সারা ভারতে তুলকালাম কাণ্ডের পর এবার শিশুদের জন্য কৌটায় বাজারজাত করা কোম্পানিটির গুঁড়াদুধে পাওয়া গেল পোকামাকড়ের লার্ভা (শূককীট)। এক টেক্সিচালকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির তামিলনাডুর খাদ্য নিরাপত্তা ও ওষুধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষ (খাদ্য নিরাপত্তা শাখা) পরীক্ষাগারে পরীক্ষার পর লার্ভা ও পোকার অস্তিত্ব পেয়ে গুঁড়োদুধটিকে শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য অনিরাপদ ঘোষণা করেছে।
আজ মঙ্গলবার দেশটির প্রভাবশালী গণমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সপ্তাহ দুই আগে ভারতের উত্তর প্রদেশে বেশ কয়েক দফা পরীক্ষা করে ম্যাগি নুডলসে উচ্চমাত্রার সিসা ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট (এমএসজি) পায় দেশটির সেফটি অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। এর পর পরই দেশটির বাজার থেকে ম্যাগি ইনস্ট্যান্ট নুডলস প্রত্যাহার করে নেওয়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। ম্যাগিকাণ্ড নিয়ে তুমুল সমালোচনার মধ্যেই নেসলের গুঁড়োদুধ নিয়ে এই ‘কেলেঙ্কারির’ খবর গণমাধ্যমে আসল।
হিন্দুস্থান টাইমস জানায়, তামিল নাডুর টেক্সিচালক কে প্রেম অনাথ তাঁর ১৮ মাস বয়সী যমজ শিশুর জন্য বাজার থেকে নেসলের নান প্রো-৩ ব্র্যান্ডের গুঁড়োদুধ কেনেন। প্রেম অনাথ অভিযোগ করেন, বাচ্চাদের দুই দিন দুধ খাওয়ানোর পর তাদের চামড়ায় অ্যালার্জি দেখা দেয়। পরে তিনি সন্তানদের একটি চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যান।
প্রেম অনাথ তখন দুধ নিয়ে নেসলের স্থানীয় কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে গিয়ে মৌখিক অভিযোগ করেন এবং দুধ পরীক্ষার অনুরোধ করেন। তখন কেয়ার সেন্টারের ব্যবস্থাপক জি কৃষ্ণাপরোমাল তাঁকে গুঁড়োদুধের কৌটা পরিবর্তন করে দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু টেক্সিচালক প্রেম অনাথ ব্যবস্থাপকের কথা ফিরিয়ে দেন। তখন ব্যবস্থাপক নিজেদের পরীক্ষাগারে গুঁড়োদুধ পরীক্ষা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু তাতেও রাজি হননি টেক্সিচালক প্রেম অনাথ। তিনি নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার ব্যাপারে অনড় থাকেন।
প্রেম অনাথ ২৯ এপ্রিল গুঁড়োদুধের কৌটা নিয়ে যান তামিল নাডুর খাদ্য নিরাপত্তা ও ওষুধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষের কাছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা আর কাথিরাবন গণমাধ্যমকে জানান, পরীক্ষার পর কর্তৃপক্ষ দুধে ২৮টি জীবন্ত পোকামাকড়ের লার্ভা এবং ২২টি চালের পোকা পেয়েছে। এটি শিশুদের জন্য অনিরাপদ। তবে এই কর্মকর্তা এটাও বলেন, দুধের পরীক্ষার মানে এই নয় যে, নেসলের সব পণ্যই অনিরাপদ।