রহস্যের হ্রদ, বিজ্ঞানীদের মাথা খারাপ!
সাইবেরিয়ার তুনগুসকা অঞ্চলে চেকো নামের একটা হ্রদ আছে। হ্রদটা গোল। আর হ্রদের পানির একেবারে স্বচ্ছ। সাইবেরিয়ার নীল আকাশের নিচে চেকো হ্রদটাও নীল হয়ে থাকে। ওই হ্রদই কয়েক দশক ধরে মাথা খারাপ করে রেখেছে বিজ্ঞানীদের।
চেকো হ্রদের জন্মটা এখন পর্যন্ত রহস্যই রয়ে গেছে!
চেকো হ্রদের উৎপত্তির কোনো কূল কিনারা এখনো বের করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। হ্রদের উৎপত্তি নিয়ে যত ধারণা এত দিন ছিল ১৯০৮ সালে ওই এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। যার মাত্রা ছিল হিরোশিমায় ফেলা বোমার ১৮৫টির সমান! আর ওই বিস্ফোরণের কারণেই উৎপত্তি হয় ওই হ্রদের।
সম্প্রতি রাশিয়ান গবেষকরা বলছেন, ওই হ্রদ ২৮০ বছরের পুরোনো। অর্থাৎ ওই এলাকায় সবচেয়ে বেশি বয়ষ্ক হচ্ছে ওই হ্রদ। রাশিয়ার গবেষকদের দাবি, সমসাময়িক সব ধারণাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইভানকিদের ধারণা, ওগডি দেবতার কীর্তিতে ওই হ্রদের জন্ম হয়েছে!
চেকো হ্রদের উৎপত্তির ব্যাপারে সবচেয়ে প্রচলিত ধারণাকে বলা হয়, ‘তুনগুসকা ইভেন্ট’। সেখানেই বলা হয় বড় ধরনের বিস্ফোরণের কথা। ১৯০৮ সালে ঘটা ওই বিস্ফোরণের শব্দ এক হাজার দুইশো কিলোমিটার দূরেও শোনা যায়। ব্রিটেনেও টের পাওয়া যায় ওই বিস্ফোরণ। বিস্ফোরণে ৮০০ কোটি গাছ মাটি থেকে উপড়ে যায়। বনাঞ্চল ছিল বলে কোনো মানুষ হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এসব গাছের ছবিও আছে। বিস্ফোরণ যে হয় তা নিয়ে তথ্য প্রমাণাদিও আছে। স্থানীয় অনেক ব্যক্তি এ ব্যাপারে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথাও জানান।
সসার নিয়ে গবেষণাকারীরা দাবি করেন ভিন্ন কথা। তাঁদের দাবি, সসার থেকে কিছু ফেলা হয় পৃথিবীর মাটিতে। আর বলাই বাহুল্য কাজটি ভিনগ্রহের প্রাণির!
মহাকাশ নিয়ে গবেষণা করেন যাঁরা, তাঁদের ধারণা অন্য। দীর্ঘসময় ধরে ওই গবেষকরা দাবি করেছেন, উল্কাপিণ্ড এসে আঘাত করে ওই এলাকায়। আর এতেই তৈরি হয় গভীর গর্তের। চেকোর জন্ম ওখানেই। ওই দলেরই অনেকে দাবি করেছেন ধূমকেতুর কারণেও তা হতে পারে।
ইতালিয়ান গবেষকরা দীর্ঘ সময় পার করেছেন চেকো হ্রদ নিয়ে। তাঁদের দাবি, চেকোর তলদেশে আগ্নেয়গিরি থাকতে পারে। যার কার্যকারিতা এখন নেই। আর এরই প্রভাবে হতে জন্ম হতে পারে চেকোর। অন্যদিকে তাঁদেরই ধারণা, ভূমিকম্পের কারণে বিশাল গোলাগার গর্ত হয়। আর ওই থেকেই জন্ম হয় চেকোর।
সম্প্রতি রাশিয়ার গবেষকদের দাবি সবকিছুকেই উল্টে দিচ্ছে। গবেষকরা বেশ আত্মবিশ্বাসী হয়ে জানিয়েছেন, চেকো ২৮০ বছরের পুরোনো। আর বিষয়টি প্রমাণে কাজও করে যাচ্ছেন তাঁরা। যদি তাই হয় তবে বলা যাবে রহস্যের কিনারা মিলেছে!