তিনবিঘা করিডর নিয়ে আন্দোলনের হুমকি
ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় হয়ে গেলেও দহগ্রাম-আঙ্গরপোতার তিনবিঘা করিডর সমস্যা রয়েই গেছে। তাই তিনবিঘা করিডর নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে কোচবিহারের বামপন্থী সংগঠন ফরওয়ার্ড ব্লক। ভারত সরকার ছিটমহল বিনিময় হলেও তিনবিঘা করিডরকে আলাদাভাবে দেখা হয়েছে উল্লেখ করে তারা এ হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
১৯৯২ সালে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার মেঘালিগঞ্জের কুচলিবাড়ি এলাকায় তিনবিঘা করিডর তৈরি হয়। ভারতের মধ্যে থাকা বাংলাদেশি ছিটমহল দহগ্রাম-আঙ্গরপোতার সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগের লক্ষ্যে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তির মাধ্যমে তিনবিঘা করিডরের সৃষ্টি হয়। ভারতের জমির ওপর দিয়ে এই করিডর তৈরি করা হয়। প্রথম দিকে এক ঘণ্টা অন্তর এই করিডর খোলা রাখার কথা থাকলেও পরবর্তীকালে সব সময় করিডর খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সব সময় করিডর খোলা থাকার কারণে মেঘালিগঞ্জের ওই এলাকা চোরাকারবারিদের স্বর্গ হয়ে উঠেছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।
ফরওয়ার্ড ব্লকের স্থানীয় বিধায়ক পরেশ অধিকারী অভিযোগ করেন, বর্তমানে তিনবিঘা করিডর দিয়ে দহগ্রাম-আঙ্গরপোতার মানুষের সঙ্গে দুষ্কৃতকারীরাও অবাধ যাতায়াতের সুযোগ পাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে ভারতের ভূখণ্ডে অপরাধ ঘটিয়ে অপরাধীরা বাংলাদেশে পালিয়ে যায়। এতে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কিছুই করার থাকে না। তাই ছিটমহল বিনিময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনবিঘা করিডরের সমস্যা মেটানোর প্রয়োজন ছিল।
পরেশ অধিকারী বলেন, ছিটমহল বিনিময় হলেও তিনবিঘা করিডরকে আলাদা করে দেখা হচ্ছে। করিডর সমস্যার সমাধান না হলে লাগাতার কর্মসূচি দেওয়া হবে।
পরেশ অধিকারী আরো বলেন, ১৯৯২ সালে তিনবিঘা করিডর চালুর প্রতিবাদে কুচলিবাড়ি উত্তাল হয়ে ওঠে। ওই সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে দুজন আন্দোলনকারী নিহত হন। এ ঘটনার স্মরণে প্রতিবছর ২৬ জুন তিনবিঘায় শহীদ দিবস পালন করা হয়। ওই ঘটনার পর থেকে ফরওয়ার্ড ব্লক এবং বিজেপি প্রতিবাদস্বরূপ তিনবিঘা করিডরের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। পরেশ অধিকারী বলেন, আগামী ২৬ জুন শহীদ দিবসের দিন জনসভার মাধ্যমে তিনবিঘা করিডর নিয়ে লাগাতার কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনবিঘা করিডর বিলোপের দাবিতে অনড় থাকা কোচবিহার জেলা বিজেপির সভাপতি হেমচন্দ্র বর্মণ বলেন, প্রথম থেকেই তাঁরা তিনবিঘা করিডরের বিরোধিতা করে আসছেন। এই অবস্থান থেকে তাঁদের পরিবর্তন হবে না।
কুচলিবাড়ি সংগ্রাম কমিটির সম্পাদক উৎপল রায় বলেন, সরকারের উচিত সঠিক তদন্ত করে তিনবিঘা করিডরের অবসান ঘটানো।

কলকাতা সংবাদদাতা