কানাডার আদালতে ‘বিএনপি নেতার’ আবেদন খারিজ
রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে ‘বিএনপির কেন্দ্রীয় একজন নেতার আবেদন’ খারিজ করে দিয়েছেন কানাডার ফেডারেল আদালত।
গত ১২ মে কানাডার অটোয়ায় অবস্থিত ফেডারেল আদালত আবেদনটি খারিজ করে দেন। আদালত বলেন, আবেদনকারী ব্যক্তি বিএনপির সদস্য। দলটি ‘সন্ত্রাসী কার্যকলাপে যুক্ত আছে, হয়েছে কিংবা ভবিষ্যতে যুক্ত হবে’। তাই রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন বাতিল করে অভিবাসন বিভাগ যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে তা বহাল রইল।
আদালতের রায়ের ১ নম্বর যুক্তিতে বলা হয়, আবেদনকারী (বলা হচ্ছে বিএনপির এক নেতা) রায় ও যুক্তিতর্কে তাঁর নাম উল্লেখ না করার আবেদন করেছেন এই মর্মে যে, রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে তাঁর নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে। বিবাদী স্বীকার করেছেন যে, বিএনপির বিষয়ে কানাডা ও বিদেশের অন্য কোনো আদালতের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশে গণমাধ্যমের নজর কাড়তে পারে। তা সত্ত্বেও বিবাদী নাম প্রকাশ না করার পক্ষে মত দিয়েছেন এই মর্মে যে, মামলার রায় ও যুক্তিতর্কে নাম প্রকাশ করলে আবেদনকারী বাংলাদেশে ফেরার পর ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
দ্বিতীয় যুক্তিতে আদালত বলেন, ‘আমি সন্তুষ্ট যে, নিরাপত্তা নিয়ে আবেদনকারীর উদ্বেগ যথাযথ এবং আদ্যাক্ষর দিয়ে চিহ্নিত করলে জনস্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। সেই বিবেচনায় নাম গোপন রাখার আবেদন গৃহীত হলো।’
পাঁচ নম্বর যুক্তিতে বলা হয়, আবেদনকারী একজন বাংলাদেশি নাগরিক। তিনি ২০০৪ সালের এপ্রিলে বিএনপির যুব সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদলে যোগ দেন। ২০১২ সালে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন। তিনি ২০১৪ সালের এপ্রিলে কানাডায় যান। একই বছর আশ্রয়ের আবেদন করেন।
১২ নম্বর যুক্তিতে আদালত বলেন, কানাডা সন্ত্রাসকে বিস্তৃত পরিসরে সংজ্ঞায়িত করে এবং আমার যুক্তিতে এমনভাবে যে, হরতালকেও যুক্তিসংগতভাবে এই সংজ্ঞার আওতায় ফেলা যায়। পুনরাবৃত্তি করে বলা যায়, এই মামলার ক্ষেত্রে সন্ত্রাসের সংজ্ঞা হিসেবে বলা যায়, কানাডার বাইরে (বাংলাদেশে সংঘটিত) জনগণের ওপর কিংবা জনগণের একাংশের ওপর হুমকিমূলক কর্মকাণ্ড কিংবা আন্দোলন যা অর্থনৈতিক নিরাপত্তাসহ সামগ্রিক নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলে, যা (উদাহরণস্বরূপ হরতাল) কোনো সরকারকে কোনো কাজ করতে বা কোনো কাজ থেকে বিরত রাখতে বাধ্য করে, যে কর্মকাণ্ড প্রাণহানি ঘটায় কিংবা শারীরিক জখম তৈরি করে অথবা মানুষের জীবন বিপন্ন করে অথবা স্বাস্থ্য কিংবা নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করে।
১৮ নম্বর যুক্তিতে আদালত বলেন, অভিবাসন বিভাগ বা আইডির পর্যবেক্ষণ হলো, ২০১৪ সালের নির্বাচনের প্রাক্কালে হরতাল আহ্বান, বিক্ষোভ কিংবা অবরোধের প্রভাব বিএনপির কাছে স্পষ্ট ছিল। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে হরতাল, বিক্ষোভ ও অবরোধের ডাক সমর্থকদের কানে কী অর্থ তৈরি করে, তা সম্বন্ধে সম্যক অবগত ছিলেন বিএনপির নেতা। ওই সময় এ ধরনের কাজ সন্ত্রাসের মধ্যে পড়ে।