লন্ডনে তিন মাসে তিন সন্ত্রাসী হামলা
সন্ত্রাসবাদ যেন পিছু ছাড়ছেই না বিশ্বের এককালের সেরা শহর লন্ডনের। সন্ত্রাসীদের থাবায় বারবার ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে যুক্তরাজ্যের রাজধানী অভিজাত এই শহর। তিন মাসেরও কম সময়ে তিনবার হামলা চালানো হয়েছে সেখানে।
এই হামলাগুলো যে শুধু নিরীহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে তাই নয়, বরং দেশটির ভবিষ্যতের জন্যও হুমকি বলে মনে করছেন অনেকে।
লন্ডনের বুকে প্রথম হামলাটি হয় চলতি বছরের ২২ মার্চ হাউস অব কমনস ভবন প্রাঙ্গণে। এর ঠিক দুই মাস পর ২২ মে বোমায় কেঁপে ওঠে হাজার হাজার দর্শকভর্তি ম্যানচেস্টার অ্যারেনা। সেই হামলার ক্ষত শুকাতে না শুকাতেই আবার হামলা। এবার লন্ডন ব্রিজে।
সর্বশেষ এই হামলা চালানো হয় গতকাল শনিবার মধ্যরাতে। সাপ্তাহিক ছুটির আগের দিন হওয়ায় অনেকেই রাত করে বাইরে ছিলেন। অনেকেই অবস্থান করছিলেন লন্ডন ব্রিজে। ক্লান্তিকর সপ্তাহ কাটানোর পর সবাই যখন একটু শান্তি খুঁজছেন, তখনই সাদা একটি গাড়ি রাস্তা ছেড়ে সেতুর ফুটপাতে উঠে পথচারীদের চাপা দেয়।
হামলার সময় সেতুটিতে ছিলেন বিবিসির সাংবাদিক হলি জোন্স। তিনি জানান, একজন পুরুষ ঘণ্টায় প্রায় ৫০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালিয়ে সেতুর ফুটপাতে পথচারীদের ওপর উঠে পড়ে।
ব্রিজে পথচারীদের চাপা দেওয়ার পর হামলাকারীরা নিকটবর্তী বরো মার্কেটে যায়। সেখানে গিয়ে মানুষকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে তাঁরা। পরে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় তিন হামলাকারী। গুলি করে হত্যা করার আগপর্যন্ত মোটামুটি আট মিনিট ধরে চলে হামলা। বরো মার্কেট এলাকায় বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁ ও বার রয়েছে।
২২ মের হামলাটি ছিল আরো ভয়ংকর। সেদিন রাতে ম্যানচেস্টার অ্যারেনায় মার্কিন সংগীতশিল্পী আরিয়ানা গ্রান্ডের কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়। আরিয়ানার গান শেষ হওয়ার পর পরই দুটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। সে সময় অ্যারেনায় ২১ হাজার দর্শনার্থী ছিলেন। হামলায় নিহত হন ২২ জন। ওই ঘটনায় সালমান আবেদি নামের এক তরুণকে অভিযুক্ত করে পুলিশ। সালমানের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সংযোগ ছিল বলে জানায় তারা। পরে ঘটনার দায় স্বীকার করে আইএস।
ঠিক দুই মাস আগে ২২ মার্চ দেশটির হাউস অব কমনসের পাশে ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজের ওপর গাড়ি নিয়ে উঠে পড়ে এক জঙ্গি। ওই হামলায় নিহত হয়েছিলেন পাঁচজন, আহত হয়েছিলেন ৪০ জনের বেশি মানুষ। সে সময়ও হামলার দায় নেয় আইএস।
বারবার হামলার বেশ শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা। এ ছাড়া উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন দেশের নেতারা। আর এই হামলাগুলো মোটেও ভালো চোখে দেখছেন না আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।