৫০ আইএস সদস্যের শিরশ্ছেদ করে ‘জল্লাদের’ উল্লাস
জল্লাদ নামেই পরিচিত ইরাকের ফালাহ আজিজ। তাঁর দাবি, জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) ৫০ সদস্যকে শিরশ্ছেদ করেছেন তিনি। প্রমাণও আছে তাঁর দাবির পক্ষে। ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমেও ‘আইএস যোদ্ধাদের’ শিরশ্ছেদ করার পর কাটা মাথা কিংবা রক্তমাখা ছুরি নিয়ে আজিজের উল্লাসের ছবিও প্রকাশ পেয়েছে।
সম্প্রতি আজিজের সাক্ষাৎকার নেয় সুইডিশ সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেসেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন আমি শপথ করি, তারা যেভাবে আমাদের গলা কাটে, আমিও তাদের ওইভাবেই গলা কাটব।’ তাঁর বিরুদ্ধে ‘ধর্মীয় মৌলবাদী’ ও তাদের সমর্থকদের হত্যার জন্য যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়। তবে সে অভিযোগ গায়েই মাখেননি আজিজ।
সাক্ষাৎকারে জল্লাদখ্যাত ওই ইরাকি দাবি করেন, ৫০ জনকে শিরশ্ছেদ করাসহ মোটমাট ১৩০ আইএস যোদ্ধাকে হত্যা করেছেন তিনি। জন্মভূমি ইরাক থেকে সন্ত্রাসীদের নিশ্চিহ্ন করাই তাঁর উদ্দেশ্য বলে জানান আজিজ।
একজনকে জবাই করে হত্যা করার সময় করা ভিডিও প্রকাশিত হয় ইন্টারনেটে। আজিজের ফেসবুক প্রোফাইলের কভার ফটোতেও রয়েছে রক্তমাখা ছুরিহাতে ছবি।
এক্সপ্রেসেন প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সেনাদের সঙ্গেই ইরাকের রণক্ষেত্রে ঘুরছেন আজিজ। তাঁর হাতে রয়েছে, এক ব্যক্তির কাটা মাথা। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, ইরাকি সেনাদের জামা পরেই চলাফেরা করছেন আজিজ। একটি ছুরি নিয়ে এক যুবকের শিরশ্ছেদ করেন তিনি। এরপর চিৎকার করে বলেন, ‘ছুরিটি তাঁর কাজ করেছে।’
সাক্ষাৎকারে ‘শিরশ্ছেদ করার সময় অনুভূতি কেমন হয়’ জানতে চাইলে আজিজ বলেন, গলা কাটার সময় তিনি যে শান্তি পান, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।
এদিকে, মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তা ডোনাটেলা রোভেরা সুইডিশ সংবাদ মাধ্যম এক্সপ্রেসেনকে বলেন, এটা যুদ্ধাপরাধ। এ বিষয়ে তিনি ইরাকি প্রশাসন ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গোষ্ঠীকে তদন্তের আহ্বান জানান।
তবে এ ক্ষেত্রেও প্রস্তুত আছে আজিজের জবাব। তিনি বলেন, ‘আইএস আমাদের এটা করতে বাধ্য করেছে। তাদের কারণেই আমাদের ভেতর আর মায়া-মমতা নেই। যখন আপনি দেখবেন আপনার ভাইকে গলা কেটে হত্যা করা হচ্ছে, আপনার মাকে গলা কেটে হত্যা করা হচ্ছে, তখন কী করবেন? আপনি জানবেনও না আপনি কী করতে চলেছেন। তারা আমাদের সঙ্গে যা করছে, আমাদেরও তাই করা উচিত।’
‘তারা যেভাবে আমাদের ভাইকে হত্যা করেছে, আমিও সেভাবে তাদের হত্যা করব। আর আমিও মৃত্যুকেই বেছে নিয়েছি’, বলেন আজিজ।