রাফা ছেড়ে পালাচ্ছে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি
তীব্র লড়াই ছড়িয়ে পড়ায় যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফা ছেড়ে পালিযে যাচ্ছেন হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নাগরিক। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আবারও জোর দিয়ে বলেছেন, রাফা শহরে ‘মানবিক দুর্যোগের’ মতো কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। খবর এএফপির।
এদিকে, ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ‘নাকবার’ ৭৬তম বার্ষিকী পালনের প্রেক্ষাপটে স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস জানিয়েছে, তারা গাজা যুদ্ধ পরবর্তী সরকার গঠনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়টির ওপর জোর দিচ্ছে। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার সময় সাত লাখ ৬০ হাজার ফিলিস্তিনির পালিয়ে যাওয়া বা বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ করার ঘটনাকে ‘নাকবা’ হিসেবে পালন করে ফিলিস্তিনের অধিবাসীরা।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা শহরে হামাসের যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে শুধু রাফা নয়, সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে উপত্যকাটির উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলেও। কয়েক মাস আগে এসব এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনী প্রবেশ করে।
অন্যদিকে, রাফায় হামলা চালালে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে তার প্রতিশ্রুত অস্ত্র ও গোলাোরুদের চালান স্থগিত করে দেবে এমন হুঁশিয়ারির পরেও প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রশাসন দেশটির জন্য ১০০ কোটি ডলারের অস্ত্র সহায়তার প্যাকেজ সম্পর্কে গত মঙ্গলবার কংগ্রেসকে অবহিত করেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন অবিলম্বে রাফায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। অন্যথায়, ইউরোপীয় জোটটির সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক বড় বাধার মুখে পড়বে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
তবে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিলেও নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেছেন, রাফা শহরে কোনো মানবিক দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। এ বিষয়ে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমাদের দায়িত্বপূর্ণ তৎপরতা ফল বয়ে আনছে। রাফার যুদ্ধক্ষেত্র থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে মানবিক দুর্যোগের বিষয়টি আলোচনায় এলেও এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বা হবেও না।’
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, রাফা শহরে ইসরায়েলের সামরিক তৎপরতা বেড়ে যাওয়ার কারণে ছয় লাখ ফিলিস্তিনি সেখান থেকে পালিয়ে গেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক হামলায় সেখানে ইতোমধ্যে ৩৫ হাজার ২৩৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনী ওই অঞ্চলটি অবরুদ্ধ করে রাখায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির মুখে খাবারের অভাবে পড়েছেন সেখানকার ফিলিস্তিনিরা।