ওবামার তৃতীয় মেয়াদ!
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/02/16/photo-1424096932.jpg)
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওবামা প্রশাসনকে সফল দাবি করে বলেছেন, অর্জনের কথা চিন্তা করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তৃতীয় মেয়াদেও তাঁদেরই আসা উচিত।
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া অঙ্গরাজ্যে এক বক্তৃতায় জো বাইডেন এ কথা বলেন।
জো বাইডেন বলেন, ভবিষ্যতে যাঁরা নেতৃত্বে আসবেন, তাঁরা যেন ওবামা প্রশাসনের কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা রক্ষা করেন। আর পরবর্তী সময়ে ডেমোক্রেট হলে তা ওবামারই তৃতীয় মেয়াদ বলা যাবে।
ভাইস প্রেসিডেন্টের জো বাইডেনের বক্তব্যে তৃতীয় মেয়াদে ডেমোক্রেটদের আনার পেছনে বেশ যুক্তিই দিয়েছেন। অনেক রিপাবলিকান হিলারি ক্লিনটনকে ডেমোক্রেটিক দল থেকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মনে করেন। তবে বাইডেন এমন কোনো ইঙ্গিত দেননি। রিপাবলিকদের ধারণা আর ভাইস প্রেসিডেন্টের বলার মধ্যে পার্থক্য আছে। অনেকে ওবামারই তৃতীয় মেয়াদের পক্ষে।
বাইডেনের বক্তব্যকে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে একটি স্বাভাবিক পদক্ষেপ। জানা গেছে, জেব বুশ প্রেসিডেন্ট হলে তা হবে যুক্তরাষ্ট্রে তৃতীয় কোনো বুশের আমল— এ নেতিবাচক প্রচারণার জন্য অনেক ডেমোক্রেট তহবিল সংগ্রহে নেমেছেন।
জর্জ ডব্লিউ বুশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শেষ সময় ও ওবামার শেষ সময়ের মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। শেষ সময়ের জনপ্রিয়তায় বুশের চেয়ে ওবামা বেশ এগিয়ে। ২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শেষ সময়ে বুশের জনপ্রিয়তা ছিল ২৮ শতাংশ। সেখানে বারাক ওবামার জনপ্রিয়তা এখনো ৪৭ শতাংশ। প্রায় ২০ শতাংশ বেশি। দেশের অর্থনীতির অবস্থার উন্নতি হলে এই জনপ্রিয়তা আরো বাড়তে পারে। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে হিলারির কথাই মনে করতে হয়, যদি তৃতীয় মেয়াদ বলতে বোঝায় ৫৯ মাস ধারাবাহিক কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং বেকারত্ব দূর হওয়া, তবে প্রেসিডেন্টের তৃতীয় মেয়াদের পক্ষে তিনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডেভিড অ্যাক্সেলরডের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের ভোটাররা প্রতিরূপ নয়, পরিত্রাণ চায়।
২০০৮ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকরা ভিন্নভাবে জন ম্যাককেইনের প্রচারণা করে। রিপাবলিকানরা প্রচার করে ম্যাককেইন প্রশাসনেরই অংশ আর ডেমোক্রেট প্রার্থী ওবামা বাইরের মানুষ। নতুন-পুরোনো দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেও শেষরক্ষা হয়নি তাঁদের।
রাজনৈতিক গবেষক অ্যাক্সেলরডের মতে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে নতুন মুখের প্রতিও যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের মনোভাব দেখা যায়। তাই বর্তমান অবস্থাদৃষ্টে বিচার করলে হিলারি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে শক্ত হতে পারেন। তবে নতুন মুখের কাছে তিনি কতটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন অনেকে। হিলারি ক্লিনটন কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের পরিচিত মুখ। টানা দুই মেয়াদে ছিলেন ফার্স্ট লেডি। পরবর্তীকালে শক্তিশালী ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। সর্বশেষ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
অনেকে মনে করেন, বারাক ওবামা ও হিলারি ক্লিনটনের মধ্যে মতাদর্শের তেমন কোনো পার্থক্য নেই। যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটদের ক্ষমতা বহাল রাখতে হলে, হিলারিকে ওবামা থেকে নিজের পার্থক্য ভোটারদের কাছে স্পষ্ট করতে হবে। হিলারিকে অনেকেই রিপাবলিকানদের কাছেও কিছুটা গ্রহণযোগ্য হিসেবে দেখেন। তবে নারী প্রেসিডেন্ট বিষয়টি এখনো যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে বেশ প্রভাব ফেলতে পারে।
হিলারি শক্তিশালী ও নতুন কোনো বার্তা নিয়েই কাজ করছেন বলে জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, হিলারি প্রায় ২০০ বিশ্লেষকের সঙ্গে অর্থনৈতিক নতুন কোনো বার্তার জন্য আলোচনা করেছেন। হিলারি শুধু কোনো নীতি দিয়ে দূরত্ব সৃষ্টি নয় বরং প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার জন্যই এগোচ্ছেন।
তিনি একটু বেশিই রাজনৈতিক—যুক্তরাষ্ট্রের অনেকে হিলারিকে এভাবেই দেখেন। এটি তাঁর ভাবমূর্তির জন্য বড় একটি হুমকি। এ ছাড়া অনেকে জানতে চান, হিলারি কি ওবামার নীতিতেই থাকবেন না দৃশ্যমাণ কোনো পরিবতন আনবেন। যুক্তরাষ্ট্রের ভোটারদের কাছে হিলারিকে এটি প্রমাণ করতে হবে তিনি কীভাবে ওবামার চেয়েও ভালো প্রেসিডেন্ট হবেন।