দাউদ পাকিস্তানেই, তথ্য-প্রমাণ ভারতের হাতে
ভারতের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও মুম্বাই হামলার হোতা দাউদ শেখ ইব্রাহিম পাকিস্তানেই রয়েছেন এবং তার পক্ষে জোরালো তথ্য-প্রমাণ ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার হাতে রয়েছে। আগামী সোমবার দুই দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে ভারত তা হস্তান্তর করতে যাচ্ছে।
ভারতের পত্রিকা দ্য হিন্দু জানিয়েছে, দাউদ ইব্রাহিম ২০১৩ সালে পাকিস্তানের করাচিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলওয়াল ভুট্টো জারদারির বাড়ির কাছে একটি বাড়ি কিনেছেন। এর তথ্য প্রমাণ দ্য হিন্দু সংগ্রহ করেছে এবং তা এনএসএ পর্যায়ের বৈঠকে ভারত হস্তান্তর করবে।
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পাকিস্তানে ইব্রাহিমের নয়টিরও বেশি সম্পত্তি চিহ্নিত করেছে। তার মধ্যে এই বাড়িটি জিয়াউদ্দিন হাসপাতালের কাছে, যেখানে ইব্রাহিম তাঁর প্রয়োজনমতো চিকিৎসা নিয়ে থাকতে পারেন। করাচিতে ইব্রাহিমের ছয়টি ঠিকানা পেয়েছে ভারত। এগুলো হলো করাচির ক্লিফটনের দরগাহ রোডে আবদুল্লাহ শাহ গাজী মাজারের কাছে মঈন প্যালেস; ৬/এ খাইবার তানজিম, ফেস-৫, ডিফেন্স হাউস এরিয়া; আইএস সেফ হাউস, মারগাবা রোড; পি ৬/২, সড়ক নম্বর-২২, বাড়ি নম্বর ২৯, ইসলামাবাদ।
দাউদ পাকিস্তানে রয়েছেন বলে ভারত দাবি করে এলেও পাকিস্তান বরাবর তা অস্বীকার করছে।
আগামী সোমবার দুই দেশের মধ্যে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আলোচনা হবে।
মুম্বাই হামলার পর দাউদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এই ধারাবাহিক হামলায় ২৫৭ জনেরও বেশি ভারতীয় নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক।
ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর দেওয়া তথ্যানুযায়ী দাউদের স্ত্রী মেহজাবিন শেখ, ছেলে মঈন নেওয়াজ এবং মেয়ে মাহরুখ, মেহরিন ও মাজিয়া করাচির ক্লিফটনে বসবাস করছেন। ছেলে মঈন সানিয়াকে বিয়ে করেছেন। মেয়ে মাহরুখ সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার ক্যাপ্টেন জাভেদ মিয়াঁদাদের ছেলেকে বিয়ে করছেন। সংস্থাগুলো দাউদের স্ত্রী মেহজাবিনের নামে ২০১৫ সালের এপ্রিলের টেলিফোন বিলের কপি সংগ্রহ করেছে। এই বিলের কপিতে ঠিকানা লেখা ডি-১৩, ব্লক-৪, করাচি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি, ক্লিফটন।
দাউদের তিনটি পাকিস্তানি পাসপোর্ট রয়েছে। দুটিতে ঠিকানা লেখা - করাচির (৬এ খায়াবান তানজিম, ফেস-৫, ডিফেন্স হাউজিং এরিয়া এবং মঈন প্যালেস, ১১ তলা, ক্লিফটনের দরগাহ রোডে আবদুল্লাহ শাহ গাজী মাজারের কাছে)।
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাছে দাউদের পরিবারের সদস্যদের পাকিস্তান থেকে দুবাই ভ্রমণের তথ্য-প্রমাণও রয়েছে। দাউদের পাকিস্তানি পাসপোর্টের কপি তাদের কাছে রয়েছে। একটি পাসপোর্টে দাউদের বর্তমান ছবি দেওয়া হয়েছে। তাতে ক্লিন শেভ করা দাউদকে বেশ বয়স্ক লাগছে। তাঁর বয়স ৫৯ হতে পারে এবং তিনি কসমেটিক সার্জারি করেননি। তাঁর এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের পাসপোর্ট নম্বর, ফ্লাইট, যাত্রী তালিকা সবকিছু গোয়েন্দাদের কাছে রয়েছে। এসব তথ্য-প্রমাণ থেকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিশ্চিত হয়েছে দাউদ ও তাঁর পরিবার পাকিস্তানেই রয়েছেন।