গ্রিসে দাবানলে ২০ জনের মৃত্যু, আহত শতাধিক
গ্রিসে ভয়াবহ দাবানলে কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছে। ১৬ শিশুসহ আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ, যার মধ্যে ১১ জনের অবস্থা গুরুতর। সার্বিক সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের কাছে আবেদন জানিয়েছে দেশটির সরকার।
গতকাল সোমবার রাজধানী এথেন্সের উপদ্বীপ অ্যাটিকার পূর্ব ও পশ্চিম অংশ এ দাবানলে আক্রান্ত হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।
মঙ্গলবার সরকারের মুখপাত্র হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন। নিহতদের বেশিরভাগই অবস্থান করছিলেন এথেন্স থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বের উপকূলীয় একটি রিসোর্টে। অনেকেই আবার নিজ বাড়ি ও গাড়ির ভেতরই অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। বনাঞ্চল থেকে উপকূলীয় শহরে ছড়িয়ে পড়া দাবানলের আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের শত শত কর্মী। তাঁরা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। যার ফলে পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে লোকজন বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে যাচ্ছেন।
গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সাইপ্রাস সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাধ্যমতো কাজ করে যাচ্ছেন তাঁরা। সব ধরনের জরুরি বাহিনীকে এ বিষয়ে তৎপর করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ভয়াবহ এ দাবানল সংকট মোকাবিলা ও সর্বোচ্চ সহায়তা নিশ্চিত করতে এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী বসনিয়ায় পূর্বনির্ধারিত এক সফর বাতিল করেছেন বলে জানা গেছে।
সরকারি মুখপাত্র দিমিত্রিস জানাকোপুলোস ২০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে, এদের মধ্যে ১১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হতাহতদের মধ্যে ১৬ শিশুও আছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, বিধ্বস্ত বাড়িঘর, কমলা রঙের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন আকাশ পেছনে ফেলে গাড়ি ছুটিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে মানুষ।
এদিকে আগুনের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে পালিয়ে যান ১০ পর্যটক। নিখোঁজ পর্যটকদের উদ্ধারেও তৎপরতা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আগুন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে ছড়িয়ে পড়ায় মঙ্গলবার উপকূলবর্তী মানুষজনকে ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া অবকাশযাপন কেন্দ্রগুলো থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে শিশুদের।
অব্যাহত এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে হেলিকপ্টার ও অতিরিক্ত ফায়ার সার্ভিসের সহায়তা চেয়ে ইউরোপের অন্য দেশগুলোর কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
ইতালি, জার্মানি, পোল্যান্ড ও ফ্রান্স এর মধ্যেই অতিরিক্ত বিমান, যন্ত্রপাতি ও ফায়ার সার্ভিসের সহায়তা পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে।
তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনা কষ্টসাধ্য হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।