জঙ্গিগোষ্ঠী হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান নেই, তালেবানের ঘোষণা
আফগানিস্তানের উগ্রপন্থী ইসলামী জঙ্গিগোষ্ঠী হাক্কানি মিলিট্যান্ট নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান জালালউদ্দিন হাক্কানি দীর্ঘ রোগভোগের পর মারা গেছেন বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জালালউদ্দিন হাক্কানিকে আফগানিস্তানের একজন চিহ্নিত শীর্ষ জঙ্গি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। হাক্কানি নেটওয়ার্ক আফগানিস্তানের তালেবান গোষ্ঠী ও আল-কায়েদার সঙ্গেও গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট।
আফগানিস্তানের তালেবান গোষ্ঠী এক বিবৃতিতে জালালউদ্দিনের মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বলে বিশ্বব্যাপী জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সাইট। তবে তিনি কখন, কবে, কোথায় মারা গেছেন—সে সম্পর্কে বিবৃতিতে কিছু বলা হয়নি। তাঁকে আফগানিস্তানেই দাফন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
আফগানিস্তানে সরকারি ও মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাটো বাহিনীর ওপর সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হামলার পেছনে হাক্কানি নেটওয়ার্কের সদস্যরা সক্রিয় ছিলেন।
জালালউদ্দিন হাক্কানি অসুস্থ হওয়ার পর ২০০১ সাল থেকে তাঁর ছেলে সিরাজুদ্দিন হাক্কানি গ্রুপটির নেতৃত্বে ছিলেন। তিনি এখন আফগানিস্তান তালেবানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা। ২০১২ সালে জাতিসংঘ হাক্কানি নেটওয়ার্ককে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তকমা দেয়।
জনশ্রুতি আছে, হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান বেশ কয়েক বছর আগেই মারা যান।
২০১৫ সালে হাক্কানি নেটওয়ার্কের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছিল, জালালউদ্দিন অন্তত আরো এক বছর আগেই মারা গেছেন। তবে বিবিসি বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত শতাব্দীর সত্তরের দশকে আফগানিস্তানে সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য হাক্কানি নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। জঙ্গিগোষ্ঠীটিকে অর্থ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তুলেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএ। ওসামা বিন লাদেন ও আবদুল্লাহ আজ্জমের মতো উগ্রপন্থীরা শুরুতে এই হাক্কানি নেটওয়ার্কের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছিলেন। ব্যক্তিগতভাবে জালালউদ্দিন হাক্কানি লাদেনের ঘনিষ্ঠ বন্ধুও ছিলেন।
১৯৯৬ সালের তালেবান গোষ্ঠী আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলের পর জালালউদ্দিন হাক্কানি সরকারের উপজাতীয় বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। কিন্তু ২০০১ সালে তালেবান ক্ষমতা হারানোর পর গোষ্ঠীটি ফের অস্ত্র হাতে তুলে নেয়।