শপথ নিলেন অস্ট্রেলিয়ার নতুন মন্ত্রীরা
অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রিসভায় যুক্ত হওয়া নতুন মন্ত্রীরা শপথ নিয়েছেন। স্থানীয় সময় আজ সোমবার অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় গভর্নমেন্ট হাউসে তাঁরা শপথ নেন। আর নতুন মন্ত্রীদের নিয়ে গঠিত পরিবর্তিত মন্ত্রিসভার প্রতি আবার জোর আস্থা জানালেন প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল।
গতকাল রোববারই অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রিসভার নতুন মুখদের নাম ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। নতুন মন্ত্রিসভায় নারী মন্ত্রী আছেন পাঁচজন। অবশ্য প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই মন্ত্রিসভায় কয়েকজন নারী যুক্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন টার্নবুল। আর গতকাল তাঁদের নাম ঘোষণা করা হয়। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম নারী প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ম্যারিস পেইন। আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদেই থাকছেন ক্ষমতাসীন লিবারেল দলের ডেপুটি লিডার জুলি বিশপ। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার মিখায়েলা ক্যাশ হয়েছেন কর্মসংস্থানবিষয়ক মন্ত্রী। ক্ষুদ্র ব্যবসাবিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন কেলি ও’ডয়ার। একই সঙ্গে সহকারী কোষাধ্যক্ষও তিনি। আর স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়েছেন সুসান লে।
এ ছাড়া টার্নবুলের মন্ত্রিসভায় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণবিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন সিমন বার্মিংহাম আর নবাগত ক্রিস্টিয়ান পোর্টার হয়েছেন সামাজসেবামন্ত্রী। যোগাযোগ ও শিল্পবিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন মিচ ফিফিল্ড এবং খনিজ ও জ্বালানিবিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন জোস ফ্রাইডেনবার্গ। আর ২৫ বছর বয়স্ক ওয়াট রয় হয়েছেন উদ্ভাবনবিষয়ক মন্ত্রী। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম আদিবাসী হিসেবে মন্ত্রিসভায় এসেছেন সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক সচিব কেন ওয়িঅ্যাট। তিনি হয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সহকারী মন্ত্রী।
নতুন মন্ত্রীদের শপথ নেওয়ার আগে ম্যালকম টার্নবুল অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনকে বলেন, পুরোপুরিই মেধার ভিত্তিতে মন্ত্রী বেছে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান সমসাময়িক সময়ে একুশ শতকের একটি সরকার প্রয়োজন এবং এ জন্য পরিবর্তন জরুরি।
মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী পিটার অ্যাবটের অনেক সমর্থক। আগের কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই টার্নবুলের অনেক সমর্থক মন্ত্রী হয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন অনেকে। পার্লামেন্টে বিরোধী নেতা বিল শর্টেন স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, শুধু সমর্থকদেরই পুরস্কৃত করেছে টার্নবুল।
বিল শর্টেনের বক্তব্যের বিরোধিতা করে ম্যালকম টার্নবুল আরো বলেন, ‘লিবারেল দলের মধ্যকার ভোটে আমাকে সমর্থন করেনি এমন অনেক ব্যক্তিও মন্ত্রী হয়েছেন। তবে দলের মধ্যেই থাকা অনেক নিকট বন্ধু পদত্যাগ করেছে। নতুনদের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আমিও তাঁদের পদক্ষেপ মেনে নিয়েছি।’ ম্যালকম টার্নবুলই আজই জানিয়েছেন, ‘লজ’ বলে খ্যাত ক্যানবেরায় অবস্থিত প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত বাসভবনে তিনি শিগগিরই উঠছেন।
বিশ্বের শীর্ষ সংবাদমাধ্যমগুলোতে বিশেষভাবে তুলে ধরা হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের প্রথম নারী প্রতিরক্ষামন্ত্রী মেরিস পেইনের কথা। অনেকেই একে টার্নবুলের পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি হিসেবে দেখছেন। আর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দেশের প্রতিরক্ষা নিয়ে বিশদ একটি পরিকল্পনা তুলে ধরবেন মেরিস পেইন। তবে সিনেটর পেইনের জন্য মন্ত্রিসভা নতুন কিছু নয়। এর আগেও টনি অ্যাবটের সময়ে তিনি ছিলেন জনসেবা মন্ত্রী। এ ছাড়া সংবিধান ও রাষ্ট্রনীতিবিষয়ক শক্তিশালী কমিটিতেও জ্যেষ্ঠ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
গত সপ্তাহে সোমবার সন্ধ্যায় অস্ট্রেলিয়ার ক্ষমতাসীন দল লিবারেল পার্টির মধ্যে এক ভোটাভুটিতে দলের নেতা হিসেবে নির্বাচিত হন ম্যালকম টার্নবুল। আর নিয়ম অনুযায়ীই তিনি হন দেশটির ২৯তম প্রধানমন্ত্রী। একই সময়ে ভোটাভুটিতে দলের ডেপুটি হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হন বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলি বিশপ। ২০০৭ সাল থেকেই তিনি ওই পদে আছেন।