পানিবিহীন স্বাস্থ্যকর টয়লেট!
পানি প্রয়োজন পড়ে না এমন টয়লেন উদ্ভাবন করেছেন ভারতের এক প্রকৌশলী। ‘ড্রাই-স্যান’ নামের এই টয়লেটে মলত্যাগের পর পানি ঢেলে তা পরিষ্কার করতে হয় না। বিশেষায়িত এই টয়লেট দেশটির প্রত্যন্ত অঞ্চল বা বস্তিতে খোলা স্থানে মলত্যাগ বন্ধ করতে সক্ষম হবে বলে আশা করা হয়।
‘ড্রাই-স্যান’ উদ্ভাবন করেছেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বোম্বের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইন সেন্টারের সাবেক ডিন ও গবেষক কিশোর মুন্সি। প্রত্যন্ত অঞ্চলে ও বস্তি এলাকায় খোলা স্থানে মলত্যাগ বন্ধ, স্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং নারী ও শিশুর সুবিধার্থেই তিনি এই টয়লেট তৈরি করেছেন। আর এতে সহায়তা করেছে ভারত সরকারের পানযোগ্য পানি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০১১ সালে ‘ড্রাই-স্যান’ তৈরির পরিকল্পনা শুরু হয়। ২০১৪ সালে এটি তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়।
কিশোর মুন্সি বলেন, ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ নির্দিষ্ট এলাকার মানুষের কথা চিন্তা করেই ‘ড্রাই-স্যান’ বানানো হয়েছে। ভারতের বেশির ভাগ প্রত্যন্ত অঞ্চলেই পানির সংকট। তাই সেখানে ফ্লাশ করা বা অধিক পানি লাগে এমন টয়লেট ব্যাবহার অসম্ভব। তিনি আরো বলেন, প্রযুক্তি একই রকম থাকলেও অনেক কম খরচেও ‘ড্রাই-স্যান’ তৈরি করা যায়।
গতানুগতিক টয়লেট ও ‘ড্রাই-স্যান’-এর মধ্যে পার্থক্য হিসেবে কিশোর মুন্সি বলেন, গতানুগতিকে বর্জ্য সরিয়ে নেওয়া বড় স্থাপনা প্রয়োজন হয়। একই সঙ্গে এটি দেখাশোনা করাও বেশ কষ্টকর। এমন টয়লেট ও বর্জ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে তা পরিবেশের জন্য প্রচণ্ড ক্ষতিকর হয়। অপরদিকে ‘ড্রাই-স্যান’-এর গঠন অত্যন্ত সরল। আর কোনো রাসায়নিকও ব্যবহার না করে শুধুমাত্র বাতাসের ভিত্তিকে ‘ড্রাই-স্যান’ টয়লেটের বর্জ্যকে সারে পরিণত করা হয়। আর একই ‘ড্রাই-স্যান’ টয়লেট ব্যবহার করা যাবে কয়েক বছর পর্যন্ত।
কিশোর মুন্সি বলেন, পাঁচ সদস্যের একটি পরিবার একটি ‘ড্রাই-স্যান’ টয়লেট টানা ৮-১০ বছর ব্যবহার করতে পারবে। এর পর টয়লেটের কাছে থাকা ট্যাংক থেকে বর্জ্য অপসারণ করে তা সার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এমন পরিষ্কারের পর ‘ড্রাই-স্যান’ পুনরায় ব্যবহার করা যাবে।