পাকিস্তানি শিল্পীকে ঠেকাতে গিয়ে ভয়ে পালাল শিবসেনা!
পাকিস্তানি শিল্পী ও লেখকদের ঠেকিয়ে ‘হিন্দুত্ববাদ’ অক্ষুণ্ণ রাখতে চাওয়া শিবসেনার আরেক নতুন কাণ্ড। পাকিস্তানের কিংবদন্তি গায়ক গুলাম আলীর অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি শিল্পীদের এক অনুষ্ঠান ঠেকাতে গিয়েছিল তারা। তবে এবার আর ‘লজ্জাজনক’ ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে দেননি দিল্লির গুরগাঁও এলাকার বাসিন্দারা। পাকিস্তানি কূটনীতিকের মুখে কালি মাখিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনার জন্মদাতা ভারতের এ মৌলবাদী সংগঠনটির কর্মীদের এবার উত্তেজিত দর্শকদের হাতে পাল্টা মার খেয়ে পালাতে হয়েছে।
গুরগাঁও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার রাতে দিল্লির গুরগাঁওয়ে একটি খোলা থিয়েটার মঞ্চে ‘বাঞ্ঝ’(বন্ধ্যা) নামে একটি নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছিল। রাত সাড়ে ৯টার দিকে হঠাৎ সেখানে এসে তাণ্ডব চালায় বেশ কয়েকজন শিবসেনার কর্মী। ওই নাটকে পাকিস্তান থেকে আসা সাতজন অভিনয়শিল্পীকে বের করে দেওয়ার দাবি করে তারা।
দর্শকরা জানায়, নাটকটি চলাকালীন পাঁচ-ছয়জনের শিবসেনার একটি দল থিয়েটার মঞ্চে উঠে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। তারা খোলা মঞ্চে দাঁড়িয়ে দর্শকদের সামনে ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলে ধ্বনি তোলার পাশাপাশি ‘পাকিস্তান মুর্দাবাদ’ বলেও স্লোগান দিতে শুরু করে। এই তাণ্ডবে সাময়িক বন্ধ হয়ে যায় নাটক।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা গুরগাঁও পুরসভার জনসংযোগ কর্মকর্তা সতবীর রোহিলা জানান, ওই বিক্ষোভকারীরা নিজেদের শিবসেনার কর্মী বলে দাবি করে। তবে মঞ্চে উঠে বিক্ষোভকারীরা অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করলে দর্শকরাই তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে তিনজন ‘শিবসেনা’ কর্মীকে মঞ্চ থেকে টেনে নামিয়ে মার দেয় দর্শকরা। এরপরই হাওয়া সুবিধার নয় বুঝতে পেরে পালিয়ে যায় ওই শিবসেনার দলটি। এই ঘটনায় মিনিট পনেরো মতো অনুষ্ঠানে ব্যাঘাত ঘটে বলে জানান সতবীর রোহিলা। অবশ্য পরে দর্শকদের দাবিতে পাকিস্তানের লাহোরের মাস ফাউন্ডেশনের শিল্পীদের নাটকটি মঞ্চায়ন হয়।
সম্প্রতি পাকিস্তানি শিল্পী, গায়ক, লেখকদের বিরুদ্ধে এই ধরনের তাণ্ডব চালাতে শুরু করেছে শিবসেনা। এর আগে মুম্বাইয়ে পাকিস্তানি গজলশিল্পী গুলাম আলীর অনুষ্ঠান ভণ্ডুল করে দেয় শিবসেনাদের দল। তা ছাড়া পাকিস্তানের সাবেক বিদেশমন্ত্রীর বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে চড়াও হয়ে অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা সুধীন্দ্র কুলকার্নির মুখে ও গায়ে কালি ছিটিয়ে দেয় শিবসেনার কর্মীরা। এ ছাড়া পুনেতে বিসিসিআই এবং পাক ক্রিকেট বোর্ডের বৈঠক বাতিল করতে বিসিসিআই দপ্তরে ঢুকে বিক্ষোভ দেখায় শিবসেনা। এর ফলে বিসিসিআই সভাপতি ও পাক ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান শাহরিয়ার খানের বৈঠক বাতিল হয়ে যায়।