দুর্নীতি মামলায় ইমরানের ১৪, বুশরার ৭ বছরের কারাদণ্ড
১৯০ মিলিয়ন পাউন্ডের আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ১৪ বছর এবং তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) তাদের বিরুদ্ধে এ আদেশ দেওয়া হয় বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন।
আদিয়ালা কারাগারের একটি অস্থায়ী আদালত কক্ষে বিচারক নাসির জাভেদ রানা এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আদালত কারাদণ্ডের পাশাপাশি ইমরান ও বুশরাকে যথাক্রমে ১০ লাখ এবং পাঁচ লাখ রুপি জরিমানা করেন। জরিমানা পরিশোধে ব্যর্থ হলে ইমরানকে অতিরিক্ত ছয় মাস এবং বুশরাকে তিন মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
রায়ে আরও বলা হয়, জাতীয় জবাবদিহিতা অধ্যাদেশ, ১৯৯৯ এর ধারা ১০(ক) অনুসারে আল-কাদির বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প ট্রাস্টের সম্পত্তি ফেডারেল সরকার বাজেয়াপ্ত করবে।
রায়ে বিচারক বলেন, ‘উভয় আসামিই আদালতে উপস্থিত আছেন। তাদেরকে এই মামলায় হেফাজতে নেওয়া হোক এবং দণ্ডিতদের সাজা ভোগ করার জন্য কমিটাল ওয়ারেন্টসহ জেল সুপারের কাছে হস্তান্তর করা হোক।’
আদিয়ালা কারাগারের বাইরে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আজ রায় ঘোষণা করা হয়। এরপর আদালত কক্ষ থেকে বুশরাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দেশটির সাধারণ নির্বাচনের পরপরই ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় ইমরান খান ও বুশরা বিবির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ইমরান ও বুশরা বিবি বাহরিয়া টাউন লিমিটেড থেকে কোটি কোটি রুপি অর্থ এবং অনেক জমি নিয়েছিলেন। ইমরানের নেতৃত্বাধীন পূর্ববর্তী পিটিআই সরকারের সময় যুক্তরাজ্য পাকিস্তানকে যে পাঁচ হাজার কোটি রুপি পরিমাণ অর্থ ফেরত দিয়েছিল, তা বৈধ করতে এসব লেনদেন হয়েছে।
ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) এক বিবৃতিতে বলা হয়, সব প্রমাণ ও সাক্ষীদের বক্তব্যে স্পষ্ট, এখানে কোনো দুর্নীতি বা অব্যবস্থাপনার ঘটনা ঘটেনি। ইমরান খান ও বুশরা বিবি কেবল ট্রাস্টি হিসেবে ছিলেন, এর বাইরে তাদের কোনো ভূমিকা ছিল না।
গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর এ মামলায় রায় ঘোষণার কথা ছিল। শীতকালীন ছুটির কারণে মামলার রায় ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। ৬ জানুয়ারি মামলার বিচারক নাসির জাভেদ রানা ছুটিতে থাকায় এদিন রায় ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি। ১৩ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানিতে বিচারকের দেরির কারণে ইমরান ও বুশরার রায় ঘোষণা করা হয়নি।
ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন এবং তার বিরুদ্ধে প্রায় ২০০টি মামলা রয়েছে। যদিও ইমরান খান বলেছেন, তার বিরুদ্ধে দায়ের করা এসব মামলা রাজনৈতিকভাবে উদ্ধেশ্যপ্রণোদিত এবং তাকে ক্ষমতায় আসা থেকে বিরত রাখারই কৌশল।