মদ বিক্রি বাড়াতে আইন সহজ করল দুবাই
রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত দোকান থেকে পর্যটকদের মদ কেনার সুযোগ করে দিতে এ সংক্রান্ত আইন শিথিল করেছে দুবাই। আগে আইন অনুযায়ী শুধু লাইসেন্সধারী বাসিন্দারা এ সুবিধা পেতেন।
সংবাদ সংস্থা এপি এক প্রতিবেদনে জানায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে মদ বিক্রির পরিমাণ গত এক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো কমে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নতুন আইনে, আকাশচুম্বী ভবনের রাজ্য দুবাই প্রথমবারের মতো ভ্রমণকারীদের মদ কেনার অনুমতির ব্যবস্থা করেছে। আরব উপদ্বীপের তেল-সমৃদ্ধ দেশটিতে ব্যাপক হতে থাকা অর্থনৈতিক মন্দার মাঝে এ পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
এ আইন মদ্যপানকারী পর্যটকদের জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাগুজে আইন হয়ে থাকা একটি বিষয়েরও সমাধান করেছে। আগে সেখানে অনুমতি না থাকা পানকারীদের মদের গ্লাস ও বিয়ারের ক্যানে চুমুক বা শ্যাম্পেনসহ মধ্যাহ্নভোজন করা ছিল বেআইনি। তবে বাস্তবতা হলো কোনো মদ পরিবেশক কারো গ্লাসে মদ ঢালার আগে অনুমতিপত্র দেখতে চাইতেন না।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের মূল আকর্ষণ দুবাইয়ে বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন বুর্জ খলিফার পাশাপাশি পারস্য উপসাগর তীরে রয়েছে অনেক রিসোর্ট, যার টানে সারা বিশ্ব থেকে পর্যটকরা ছুটে আসে। তারা ঘুরে বেড়ায় কয়েক কিলোমিটার লম্বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মলে, জিপ নিয়ে যায় মরুভূমিতে আর উপভোগ করে নানা রেস্তোরাঁর খাবার। তাদের অনেকে সেখানে মদ্যপানও করে।
মদ খাওয়ার ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যে এগিয়ে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশটির সাত রাজ্যের একটি শারজাতে মদ নিষিদ্ধ হওয়ার পরও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এ দেশে মাথাপিছু বছরে মদ্যপানের পরিমাণ ৩ দশমিক ৮ লিটার।
মদ হলো বিশেষ করে রাষ্ট্রের জন্য অনেক বড় ব্যবসা। দুবাইতে মদের বোতলে আমদানি কর দিতে হয় ৫০ শতাংশ। সেই সাথে দোকানে বিক্রির সময় লাগে অতিরিক্ত ৩০ শতাংশ কর। সরকারি মালিকানাধীন দুবাই ডিউটি ফ্রি গত বছর শুধু বিমানবন্দরের টার্মিনালগুলোতে ২০০ কোটি ডলারের পণ্য বিক্রি করেছে। যার মধ্যে ছিল ৯০ লাখ ক্যান বিয়ার, ৩০ লাখ হুইস্কির বোতল ও ১৫ লাখ ওয়াইনের বোতল। ডিউটি ফ্রি এলাকায় মদ বিক্রির ক্ষেত্রে কখনো লাইসেন্স লাগে না।
বিশ্ব বাজারে জ্বালানির দাম কমে যাওয়ায় দুবাইয়ের আবাসন খাতে ৩০ শতাংশ মূল্য হ্রাস পেয়েছে। সেই সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের ভয়ে নগর-রাজ্যটির কর্মীরা চাকরি হারাচ্ছে। এ মন্দা অবস্থা মদের বাজারেও প্রভাব ফেলেছে। সার্বিক মদ বিক্রি ২০১৭ সালের ১৬ কোটি ৩৭ লাখ লিটার থেকে কমে ২০১৮ সালে ১৬ কোটি ১৫ লাখে দাঁড়িয়েছে বলে বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউরোমনিটর জানিয়েছে।
এদিকে, যেকোনো পরিমাণ মদ খেয়ে গাড়ি চালানো এবং প্রকাশ্য জায়গায় মদ খাওয়া অবৈধই থাকছে। সম্প্রতি প্রকাশিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, দোকান থেকে কেনা যেকোনো মদ শুধু ‘আপনি হোটেল রুম/বাসায়’ পান করতে পারবেন।