জিম্মিদের ভিডিও প্রকাশ করল হামাস, বন্দিবিনিময় চুক্তি করার আহ্বান স্বজনদের
জিম্মিরা সুস্থ আছেন–এই বার্তা দেওয়ার জন্য আরও দুজনের ভিডিও প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। দিনক্ষণ উল্লেখ না করা জিম্মিদের ভিডিওতে ওমরি মিরানকে (৪৬) বলতে দেখা যায়, তিনি ২০২ দিন ধরে বন্দি আছেন। কিথ সিগ্যাল (৬৪) নামে অপর পণবন্দি উল্লেখ করেন, উহুদিদের সাম্প্রতিক বাৎসরিক অনুষ্ঠানের কথা। আর এসব কথার মধ্য দিয়ে একটি বিষয় পরিষ্কার হয়, তা হলো ভিডিওটি সম্প্রতি ধারণ করা হয়েছে। খবর বিবিসির।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস যখন ইসরায়েলে হামলা চালায় তখনই বন্দি করা হয় এই দুজনকে। ভিডিওটি প্রকাশের পর ভুক্তভোগীদের আত্মীয়স্বজনেরা বলেছেন, তারা এই দুই ব্যক্তিকে ফিরিয়ে আনার লড়াই চালিয়ে যাবেন। তারা ইসরায়েল সরকারের প্রতি হামাসের সঙ্গে নতুন বন্দিবিনিময় চুক্তি করারও আহ্বান জানান।
এই ভিডিওটি এমন সময়ে প্রকাশ করা হলো যখন হামাস বলছে, তারা যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরায়েলের সর্বশেষ প্রস্তাবটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে। গণমাধ্যমের প্রদিবেদনগুলোতেও দেখা যায়, অচল হয়ে পড়া দর-কষাকষির আলোচনায় নতুন প্রাণ দিতে মিসরীয় মধ্যস্থতাকারীরা এখন ইসরায়েলে অবস্থান করছেন।
মার্কিন নাগরিক কিথ সিগ্যালকে তার স্ত্রী আভিভার সঙ্গেই অপহরণ করা হয়েছিল, যদিও তার স্ত্রীকে গত নভেম্বরে সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতির সময় মুক্তি দেওয়া হয়। কিথের ভিডিও প্রকাশের পর এ প্রসঙ্গে আভিভা এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘কিথ, আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমরা তোমার ফিরে আসা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।’
তেল আবিবে সাপ্তাহিক বিক্ষোভে গতকাল শনিবার ওমরি মিরানের বাবা ড্যানি মিরান ইসরায়েল সরকারের প্রতি পণবন্দিদের মুক্তির বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান। এ সময় তিনি সমাবেশে স্লোগানের নেতৃত্ব দেন। যখন তিনি তার ছেলের ভিডিও দেখার মুহূর্তটি বর্ণনা করছিলেন, তখন বেশ আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি আশা করছি সে হয়তো বেঁচে আছে।’
ড্যানি মিরানের বক্তব্যটি ছিল অনেকটা রাজনৈতিক। তিনি ডানপন্থি সদস্য এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়কমন্ত্রী ইতামার বেনজিভির ও অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মটরিচকে বন্দিবিনিময় চুক্তি স্বাক্ষরের আহ্বান জানান। এ ছাড়া তিনি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ‘কার্যকর’ চুক্তি অনুমোদনেরও আহ্বান জানান।
ড্যানি মিরান বক্তব্য দেওয়ার সময় হামাসের সরবরাহ করা পণবন্দিদের ভিডিওটি বড় পর্দায় পুরোটা দেখানো হয়, যা খুবই বিরল ঘটনা।
জিম্মিদের মুক্তির লক্ষ্যে গঠিত পণবন্দিদের পারিবারিক ফোরামের সদর দপ্তরে থেকে বলা হয়েছে, পণবন্দিদের ফিরিয়ে আনতে সরকারকে যে অবশ্যই সবকিছু করতে হবে এবং এ বিষয়ে যে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে, তার সবচেয়ে পরিষ্কার আলামত সাম্প্রতিক ভিডিওটি।