পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের চর সন্দেহে ভারতের কলকাতা থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ রোববার সকালে খিদিরপুর বন্দরসংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া মহম্মদ এরশাদ, আশফাক এবং মহম্মদ জাহাঙ্গীর এই তিনজন সম্পর্কে বাবা, ছেলে ও মামা।

কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার ভারতের উত্তরপ্রদেশে গ্রেপ্তার হওয়া পাকিস্তানি চর মহম্মদ ইজাজকে জেরা করে তিনজনের নাম জানা যায়। পুলিশের ধারণা, পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ হয়ে কলকাতায় আসার পর গার্ডেনরিচ এলাকায় মহম্মদ এরশাদের কাছেই আশ্রয় নিয়েছিল ইজাজ। ইজাজকে ভারতীয় ভোটার কার্ডসহ নথিপত্র তৈরিতে সাহায্য করেছিল এরশাদের ছেলে আশফাক ও শ্যালক জাহাঙ্গীর। এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া আশফাক স্থানীয় হরিমোহন কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃতরা আইএসের হয়ে কলকাতায় বসে কাজ করত। আশফাক আনসারি আসলে বাংলাদেশি বলেও দাবি করেছে পুলিশ। আজ থেকে ২০ বছর আগে সে ভারতে আসে। গত ১২ নভেম্বর পুরীতে ট্রেন বিস্ফোরণের সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃতদের যোগসূত্র ছিল বলে ধারণা করছে পুলিশ।

গত শনিবার রাতে উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেপ্তার হওয়া এজাজকে নিয়ে ওই রাজ্য সরকারের স্পেশাল টাক্সফোর্স কলকাতার বন্দরসংলগ্ন মেটিয়াবুরুজ, গার্ডেনরিচসহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালায়। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সতর্কবার্তা পেয়ে আগে থেকেই ওই অঞ্চলে নজরদারি শুরু করে কলকাতা পুলিশ।

কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের মিরাটে গ্রেফতার হওয়া মহম্মদ এজাজ এর আগে কলকাতার গার্ডেনরিচে শিপ বিল্ডার্সের অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। এই সুযোগে বন্দর এলাকায় ভারতীয় নৌবাহিনীর ছবি তুলে পাকিস্তানে পাঠাতেন তিনি।

কলকাতা পুলিশের সদর কার্যালয় লালবাজার সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি কলকাতায় হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছে এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার জন্য আইএসআই তাদের চর কলকাতায় পাঠিয়েছে এমন খবর আগেই পাঠিয়েছিল ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাই অভিযানের ওপর বাড়তি জোর দেওয়া হয়। আর কলকাতার মাটিতে আইএসআই চরেরা যে সক্রিয় তার সত্যতার কথা স্বীকার করেছেন ১২ নভেম্বর পুরীতে ট্রেন বিস্ফোরণে অভিযুক্ত রামচন্দ্রন সুবাস।

পুলিশি জেরায় রামচন্দ্রন জানিয়েছেন, পুরীতে যে তিনটি ট্রেনে আগুন লাগে তার পেছনে আইএসআইয়ের হাত রয়েছে। ওই দিনের বিস্ফোরণটি স্রেফ মহড়া ছিল বলেও জানান তিনি। ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ, পুরীতে ট্রেনে বিস্ফোরণের জন্য রামচন্দ্রন পাঁচ লাখ রুপি পেয়েছিলেন। রামচন্দ্রনের মতে, তার মতোই কলকাতায় গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা টাকার বিনিময়েই আইএসআইয়ের হয়ে কাজ করত।