নেতার চুরির দায় দলের নয় : মমতা
বিধানসভা নির্বাচনের আগে সারদা কেলেঙ্কারী থেকে নিজেকে ও দলকে দূরে সরাতে চাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূলের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, কোনো নেতার চুরির দায় দলের নয়।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, গতকাল সোমবার হাওড়ায় আমতা মাঠে এক জনসভায় মমতা এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘যদি কোনো নেতা চুরি করে তাহলে তার জন্য দলকে দায়ী করা যাবে না। যদি কোনো ব্যক্তি টাকা চুরি করে থাকে, তাহলে তিনি একজন চোর। তার জন্য দল চোর হতে পারে না। যদি অবৈধভাবে কোনো অর্থ একজন নেতার হাতে আসে, তাহলে তিনি এবং শুধু তিনি একাই এই চুরির জন্য দায়ী। দল ব্যক্তিগত দুর্নীতির দায়িত্ব নেবে না।’
মমতার এই বক্তব্যে সারদা কেলেঙ্কারীর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে যেসব নেতা ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিবিআই)তদন্তের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছেন তাঁদের কাছ থেকে নিজেকে ও দলকে দূরে সরিয়ে নেওয়ার ইঙ্গিতই পাওয়া গেছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য দুই বছর আগে সারদা কেলেঙ্কারীর সঙ্গে তার দল তৃণমূলের নাম জড়িয়ে যাওয়া নিয়ে অবস্থানের পুরোপুরি বিপরীত। সেই সময় তিনি ব্যঙ্গ করে বলেছিলেন, ‘কূনাল চোর? মদন চোর? মুকুল চোর, টুম্পাই চোর? আমি চোর? বাকিরা সব সাধু?’ গত ডিসেম্বরে মদন মিত্রকে গ্রেপ্তারের পর জ্যেষ্ঠ তৃণমূল নেতা ও টালিউড অভিনেতারা রাস্তায় নেমে ‘আমরা সবাই চোর’ প্লাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভ করেন। দুই বছর পর মমতা এই বক্তব্যের মাধ্যমে সারদা কেলেঙ্কারীর সঙ্গে তাঁর নেতারা জড়িত এটি স্বীকার করে নিলেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা।
বোঝা যাচ্ছে নিম্ন আদালত থেকে মদন মিত্রের জামিনের পর কলকাতা হাইকোর্টে সিবিআইয়ে কঠোর অবস্থানের মুখেই মমতা সারদা কেলেঙ্কারী থেকে দূরে সরে থাকতে চাচ্ছেন। সিবিআই জানিয়েছে, মদন মিত্রের দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাঁচানোর এই শেষ চেষ্টা সত্ত্বেও এই সাবেক মন্ত্রীকে আবারও কারাগারে যেতে হবে। ধারণা করা হচ্ছে, সিবিআই শ্রীজয় বসু ও রজত মুজমদারের জামিন মঞ্জুরকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। শ্রীজয় তৃণমূল থেকে পদত্যাগ করেছেন।
জনসভায় রাজনৈতিক জীবনে নিজের সততার কথা উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘আমার গাড়ি, বাড়ি ও জমির প্রয়োজন হয় না। আমি যা কিছু অর্জন করেছি, তা দীর্ঘ জীবন সংগ্রামের মাধ্যমে। আমি আপনাদের জন্য লড়াই করেছি। আমি ক্ষুদ্র কুটির থেকে আজকের এই অবস্থানে পৌঁছেছি। আমি আমার ছেলেদের সংগ্রাম করতে বলেছি। যদি তারা কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে পারে তাহলেই তৃণমূলে থাকতে পারবে।’