এখনো জীবিত কাসাব!
ভারতের মুম্বাই নগরীতে তাজ হোটেলে সন্ত্রাসী হামলার পর পেরিয়ে গেছে সাত বছর। আর ওই সন্ত্রাসী হামলায় ভারতের আদালতে মামলার প্রধান অপরাধী আজমল কাসাবকে দোষী সাব্যস্ত ও মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনার পরও তিন বছর কেটে গেছে। কিন্তু এতদিন পর স্কুলশিক্ষক মুদাসসির আহমেদের দাবি, আজমল কাসাব জীবিত আছেন। এমনকি তিনি বহাল তবিয়তে পাকিস্তানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এমন দাবিও করেছেন তিনি। পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক ডন আজ শনিবার এ খবর জানিয়েছে।
গতকাল শুক্রবার পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে কাসাবের লেখাপড়া সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপনের একপর্যায়ে এ কথা জানিয়েছেন মুদাসসির। তিনি বলেছেন, প্রয়োজন হলে তিনি তাঁর ছাত্র কাসাবকে আদালতে হাজির করতে তৈরি আছেন। এর আগে ২০১৪ সালের মে মাসেও আদালতে কাসাব বেঁচে আছেন বলে জানিয়েছিলেন ওই শিক্ষক।
শিক্ষক মুদাসসির জানান, কাসাব নামে যাঁকে ২০১২ সালে ভারতের পুনে কারাগারে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, তিনি আসলে কাসাব নন। জিজ্ঞাসাবাদে মুদাসসিরের কাছে জানতে চাওয়া হয়- কাসাবের সঙ্গে তাঁর সর্বশেষ কবে যোগাযোগ হয়েছে। জবাবে তিনি জানান, কয়েকদিন আগেও কাসাবের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছে।
তবে এই ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শিক্ষক মুদাসসিরের এই দাবি একেবারেই ঠিক নয়। মামলার অন্যতম অভিযুক্ত লস্কর-ই-তৈয়বার কমান্ডার জাকিউর রহমান লাকভির গ্রামের বাসিন্দা ওই শিক্ষক। এমনটা হতে পারে যে, লাকভির চাপে তিনি এই সাক্ষ্য দিয়েছেন।
ডন জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বৈদেশিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা সারতাজ আজিজের সঙ্গে এক বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল, মুম্বাই জঙ্গি হামলার মামলার বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আর ওই ঘটনার পরের দিনই ওই মামলার সাক্ষীর কাসাবের বেঁচে থাকার দাবি দেশটির সরকারকে চরম অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে।
ডন জানায়, ২০০৮ সালের নভেম্বর মাসে ভারী অস্ত্রসহ কমপক্ষে ১০ সন্ত্রাসী ভারতের মুম্বাই নগরীর তাজ হোটেল দখল করে নেয় এবং তাদের হামলায় ১৬৬ জন নিহত হয়। পরে ভারতীয় সেনাবাহিনী হোটেলটি দখলমুক্ত করে। ওই ঘটনায় কাসাব ছাড়া বাকি নয় সন্ত্রাসী নিহত হয়েছিলেন। পরে ডিসেম্বর মাসে ওই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একমাত্র ব্যক্তিকে পাকিস্তানি নাগরিক আজমল কাসাব বলে জানানো হয়।
পরে ২০১২ সালের ২১ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৭টায় আজমল কাসাবকে ফাঁসি দেওয়ার কথা জানায় ভারত সরকার। তবে এই সময়ে কাসাবের শিক্ষক মুদাসসিরের বক্তব্যে নতুন করে আজমল কাসাব ইস্যুটিকে আবার আলোচনায় এনে দিল।