হলো না ভারত-পাকিস্তান বৈঠক
পূর্বনির্ধারিত পাকিস্তান-ভারত উচ্চ পর্যায়ের শান্তি আলোচনা শেষ পর্যন্ত হলো না। আজ শুক্রবার ইসলামাবাদ-দিল্লি পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভারতের বিমানঘাঁটিতে পাকিস্তানের জঙ্গিগোষ্ঠীর হামলার জেরে নির্ধারিত সেই আলোচনা স্থগিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, এদিন দুই দেশ পারস্পরিক সমঝোতায় বৈঠকটি আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে এনডিটিভি ও ডনের খবরে বলা হয়েছে, পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে হামলাকারী জঙ্গিগোষ্ঠী জয়শ-ই-মুহাম্মদের প্রধান নেতাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে কিছুই জানে না বলে জানিয়েছে ইসলামাবাদ।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপের বরাতে টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে ‘খুব শিগগির এ বৈঠক হবে’ বলা হলেও পরিবর্তিত দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়নি। তবে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের পাঠানকোটের যে বিমানঘাঁটিতে হামলা হয়েছে, সেখানে পাকিস্তানের প্রতিনিধি পাঠানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ভারত।
গত বুধবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, অভিযানে জয়শের বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশটির গণমাধ্যমগুলো জানায়, বিশেষ অভিযানে জয়শপ্রধান মাসুদ আজহারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ বলেন, ‘মাসুদ আজহারকে গ্রেপ্তারের ব্যাপারে আমরা (ইসলামাবাদ থেকে) অফিশিয়াল কোনো তথ্য পাইনি।’
এর আগে পাঠানকোট হামলার পরপরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে ফোন করে জানান, এই হামলায় পাকিস্তানের জঙ্গিদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। পাকিস্তান যদি তাদের বিরুদ্ধে ভারতের কাছে গ্রহণযোগ্য ও দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেয়, তাহলে আলোচনার পথ খোলা থাকবে।
পরে এ বিষয়ে নওয়াজ শরিফ সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দেন। এর ধারাবাহিকতায় বুধবার পাকিস্তানের দুই সরকারি কর্মকর্তা জানান, মাসুদ আজহার, তাঁর এক ভাই ও শ্যালককে গত সোমবার ইসলামাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে বৃহস্পতিবার পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, মাসুদকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে তারা কিছুই জানে না।
চলতি বছরের ২ জানুয়ারি পাঠানকোটে হামলায় ছয় জঙ্গি ও সাত সৈনিক নিহত হন। আহত হন আরো ২২ জন। মাসুদ আজহার ১৯৯৪ সালে কাশ্মীরে গ্রেপ্তার হন। ১৯৯৯ সালে তিনি মুক্তি পান।
এর আগে গত ২৫ ডিসেম্বর নরেন্দ্র মোদি আকস্মিক সফরে লাহোরে গিয়ে নওয়াজ শরিফের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে দুই নেতা পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ে শান্তি আলোচনার জন্য আজ ১৫ জানুয়ারি শুক্রবার তারিখ ঠিক করেন। তবে এর কয়েক দিন পরই পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলা হয়।