তাঁরা কিউবার মুসলমান
যুক্তরাষ্ট্রের নিকটতম ও আলোচিত কমিউনিস্ট দেশ কিউবা। সেখানে কোনো মসজিদ নেই। কিন্তু মুসলমান আছেন প্রায় চার হাজার। ইসলাম ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, কিউবায় দীর্ঘ পাঁচ দশকের কমিউনিস্ট শাসন সম্প্রতি শিথিল হতে শুরু করেছে। কিন্তু এখনো কিউবার মুসলমানরা ধর্ম পালনে অনেক প্রতিবন্ধকতার শিকার হন।
কিউবার উপকূলীয় শহর আলামারা। এখানকার একটি মাঠে প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজের জন্য দেশটির কয়েকজন মুসলমান জড়ো হন। এই শহরে হাতে গোনা অল্প কজন মুসলমান বাস করেন। মাঠে নামাজ চলাকালেই এর পাশ দিয়ে স্বল্পবসনা নারীরা হেঁটে যান। পার্কে বসে থাকা অনেকেই তাকিয়ে দেখেন নামাজ পড়ার দৃশ্য।
কিউবার নাগরিক হোর্হে এলিয়াস সম্প্রতি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তাঁর বর্তমান নাম ঈসা। গত বছর আরো কয়েকজন মুসলমানের সঙ্গে তিনি হজ করে এসেছেন। ঈসা বলেন, কিউবায় একজন মুসলমান হিসেবে ধর্ম মেনে চলা একদিকে খুব সহজ, আবার অন্যদিকে খুবই জটিল।
ঈসা আরো বলেন, ‘আমরা এখনো খুবই ছোট্ট সম্প্রদায়। অনেক সময়ই মুসলমান হিসেবে জীবনযাপন অতটা সহজ নয়। এখানে আমরা হালাল খাবার চাই, সেটা পাওয়া সহজ নয়।’ ঈসা জানান, কিউবার মানুষ প্রচুর শূকরের মাংস খায়। মদ পান করে। ইসলামে এসব নিষিদ্ধ। তবে এটা কোনো বড় সমস্যা নয়। এখানকার মানুষ খুবই ভালো। সবার সঙ্গেই মুসলমানদের চমৎকার সম্পর্ক।
বর্তমানে কিউবার রাজধানী হাভানায় মুসলমানদের নামাজ পড়ার জন্য একটি মাত্র স্থান আছে। এটি হলো ইমাম ইয়াইয়া পেড্রো টোরেজের বাড়ি। কিউবার ইসলামিক লিগের প্রেসিডেন্ট টোরেজ বলেন, ‘মদ্যপান আর খোলামেলা যৌনতা কিউবায় খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। আর শূকর হলো এখানকার জাতীয় খাবার। তাই কিউবায় কড়াকড়িভাবে ইসলাম মেনে চলা বেশ কঠিন।’
সম্প্রতি কিউবা সফরে এসেছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। কিউবার নেতা রাউল ক্যাস্ত্রোর সঙ্গে বৈঠকে তিনি দেশটিতে মসজিদ তৈরির প্রস্তাব দেন। তবে এরদোয়ানের প্রস্তাবের আগেই মসজিদ তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে সৌদি আরব। হাভানার শিল্পাঞ্চলের কাছে সৌদি অর্থে তৈরি হতে যাচ্ছে কিউবার প্রথম মসজিদ। শিগগিরই মসজিদটির কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।