বাংলাদেশে আলেমদের ফতোয়ায় খুশি ভারত
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর বিভিন্ন আক্রমণের ঘটনা বাংলাদেশের সরকার যেভাবে মোকাবিলা করতে চাইছে তাতে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে ভারত। দিল্লিতে আজ রোববার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছেন, ‘এটা স্বীকার করতেই হবে যে শেখ হাসিনা সরকার এই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরতম পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং ইতিমধ্যেই দেশটিতে তিন হাজারেরও বেশি সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
তবে পাশাপাশি তিনি এটাও উল্লেখ করেছেন প্রতিবেশী দেশে নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের জন্য ভারতের দরজা সব সময়ই খোলা থাকবে। দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি বাংলা।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নিয়মিত এ সংবাদ সম্মেলনের অনেকটা প্রসঙ্গজুড়েই ছিল বাংলাদেশ এবং সেখানে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর সাম্প্রতিক নানা হামলার ঘটনায় ভারত সরকার বিচলিত।
এ ছাড়া বিবিসি বাংলার এক প্রশ্নের জবাবে সুষমা স্বরাজ এটাও বলেছেন যে, এই হামলাগুলোকে তিনি ঠিক বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখতে রাজি নন। তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর এই হামলাগুলো যেমন দুর্ভাগ্যজনক, তেমনি ভারতের জন্য পীড়াদায়কও বটে।
সুষমা স্বরাজ আরো বলেন, এটা ভাল খবর যে বাংলাদেশের ইসলাম ধর্মীয় নেতারা রীতিমতো ফতোয়া দিয়ে এই ধরনের হামলাকে ইসলামবিরোধী বলে বর্ণনা করেছেন – এবং লক্ষাধিক ধর্মীয় নেতা তাতে স্বাক্ষরও করেছেন।
ফলে ভারত মনে করছে প্রকাশ্যে যখন হাজার হাজার ধর্মীয় নেতা হিন্দুদের ওপর হামলার বিরুদ্ধে সরব হতে পারেন, তখন বাংলাদেশের সরকার ও দেশের মানুষ অবশ্যই এই সব হামলার বিরুদ্ধে।
কিন্তু অন্য একটি প্রসঙ্গে তিনি এটাও জানাতে ভোলেননি, বাংলাদেশ থেকে নির্যাতিত সংখ্যালঘুরা ভারতে এলে ভারত সরকার তাদের আশ্রয় দিতে দায়বদ্ধ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের কথা যখন বলছি, তার মধ্যে কিন্তু হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন এরা সবাই পড়ে। নির্যাতিত সংখ্যালঘু বলতে আমরা শুধু হিন্দুদের কথাই বলছি না। ফলে ভারত যখন শরণার্থীদের জন্য নীতিমালা প্রস্তুত করছে, তখন কিন্তু সেটা আমাদের আশপাশের প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের কথা মাথায় রেখেই বানানো হচ্ছে।’
প্রকারান্তরে এর মাধ্যমে সুষমা স্বরাজ এটাই বুঝিয়ে দিয়েছেন – বাংলাদেশ থেকে হিন্দু বা বৌদ্ধরা অত্যাচারিত হয়ে ভারতে এলে স্বাগত, কিন্তু মুসলিমরা নন।