বিচার নিয়ে প্রশ্ন, ফাঁসি স্থগিত চায় জাতিসংঘের দপ্তর

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না করার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দপ্তর ইউনাইটেড ন্যাশনস হাইকমিশনার ফর হিউম্যান রাইটস (ইউএনএইচসিএইচআর)।
স্থানীয় সময় বুধবার (৮ এপ্রিল) ইউএনএইচসিএইচআরের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ আহ্বান জানান দপ্তরের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি। ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ‘সোমবার সুপ্রিম কোর্টে আপিল আবেদন খারিজ হওয়ার পর শিগগিরই কার্যকর হতে চলা জামায়াতে ইসলামীর নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসির কার্যক্রম দ্রুত স্থগিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
শামদাসানি বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এ বিচার প্রক্রিয়ায় অনিয়ম হয়েছে এবং এতে স্বচ্ছ বিচারের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করা হয়নি।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরো বলা হয়, ‘কঠোরভাবে স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হলেও এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মারাত্মক অপরাধের ক্ষেত্রেও জাতিসংঘ মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে ।
মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করতে এবং এই অমানবিক কর্মকাণ্ড (মৃত্যুদণ্ড) বাতিল করেছে যেসব দেশ, তাদের সঙ্গে যোগ দিতে আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
ইউএনএইচসিএইচআরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘প্রেস ব্রিফিং নোটস’-এ বলা হয়, জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর দীর্ঘদিন ধরেই বিচারের স্বচ্ছতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে।
২০১০ সালে কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে ট্রাইব্যুনাল বিরোধী দল জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে ১৬টি রায় দিয়েছেন, যার ১৪টি মৃত্যুদণ্ড। দোষী সাব্যস্ত সবার বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অন্যান্য অপরাধের অভিযোগ ছিল। এঁদের একজন কাদের মোল্লাকে ২০১৩ সালে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
২০১৩ সালের মে মাসে কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ২০১৪ সালের নভেম্বরে আপিলেও তাঁর মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে। এর পর তিনি (কামারুজ্জামান) গত ৫ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করেন। তবে সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদনের যুক্তিগুলো যাচাই-বাছাই না করেই তা দ্রুত খারিজ করে দেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিটি বেসামরিক ও রাজনৈতিক অধিকারসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তির ব্যাখ্যা দেয়। এ চুক্তিটিতে বাংলাদেশ স্বাক্ষর করেছে।