যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গাজা যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়েছে গাজা যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ। আর এর অংশ হিসেবে লস এঞ্জেলেস অঙ্গরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়াতে নিরাপত্তার অজুহাতে আগামী ১০ মের প্রধান গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। খবর বিবিসির।
এক বিবৃতিতে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ইউনিভার্সটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া কর্তৃপক্ষ জানায়, ৬৫ হাজার শিক্ষার্থী, পরিবার ও বন্ধুদের প্রথাগত অনুষ্ঠানটির চূড়ান্ত পর্ব আয়োজন করতে পারছে না।
গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যুদ্ধবিরোধী প্রতিবাদকারীদের একটি ছাউনি পুলিশ ভেঙে দেয় এবং বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করে। এমন পরিস্থিতিতে বাতিল করা হয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠান।
এর আগে ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, নিরাপত্তা হুমকির কারণে মুসলিম শিক্ষার্থী আসনা তাবাসসুমকে ভ্যালেডিকটোরিয়ান হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না।
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে তার সূত্রপাত হয়েছিল গত সপ্তাহে। নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে প্রথম বিক্ষোভে অংশ নেয় শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে শতাধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আটলান্টার ইমোরি ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভের স্থান ছাড়তে রাজি না হওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার ২৮ জন প্রতিবাদকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ইমোরি ইউনিভার্সিটির প্রতিবাদকারীরা জানায়, তারা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তাদের বিক্ষোভ আয়োজন করছে। এ ছাড়া আটলান্টায় পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠারও প্রতিবাদ জানায় তারা। শহরটিকে ‘পুলিশ নগরী’ হিসেবে গড়ে তোলারও প্রতিবাদ জানানো হয় বিক্ষোভে।
এ ছাড়া যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আরও বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে। এসব বিক্ষোভে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধে অস্ত্র তৈরির কোম্পানিতে বিনিয়োগ না করতে এবং গণহত্যা থেকে সরে আসার আহ্বান জানানো হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলায় হামাসের বন্দুকধারীরা প্রায় এক হাজার ২০০ লোককে হত্যা করে এবং আরও ২৫৩ জনকে গাজায় জিম্মি করে নিয়ে আসে।
এর প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল গাজায় অবিরাম বোমা বর্ষণ ও স্থল অভিযান শুরু করে। যার ফলে মারা যায় ৩৪ হাজার ১৮৪ জন ফিলিস্তিনি, যার অধিকাংশই নিরীহ নারী ও শিশু।