তরুণদের উগ্রবাদে উৎসাহিত করার অভিযোগে গ্রেপ্তারের দাবি ওঠার পর জাকির নায়েক আপাতত নিজ দেশ ভারতে ফিরছেন না। ঈদের আগে উমরা পালনে সৌদি আরব যাওয়া এই বিতর্কিত ইসলামী বক্তার গত সপ্তাহে দেশে ফেরার কথা ছিল। তিনি বিমানের টিকেটও কেটেছিলেন। তবে সেই টিকেট বাতিল করা হয়েছে।

এবার জাকির নায়েক জানিয়েছেন, এ বছর তিনি ভারতে ফিরছেন না। আজ শুক্রবার সকালে স্কাইপের মাধ্যমে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেছেন বলে ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়েছে। 

জাকির নায়েক বর্তমানে সৌদি আরব অবস্থান করছেন। সেখানে উমরা হজ করতে গিয়েছিলেন নায়েক। উসকানিমূলক বক্তৃতা দেওয়ার অভিযোগে ভারতে একাধিক তদন্ত চলছে নায়েকের বিরুদ্ধে।

এর আগে ১ জুলাই ঢাকার গুলশানে জঙ্গি হামলার জন্য পরোক্ষভাবে আঙুল ওঠে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে। হামলাকারীদের দুজনের ফেসবুক থেকে জানা যায়, তাঁরা জাকির নায়েকের বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। এরপর ভারতের মুম্বাইভিত্তিক ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা জাকির নায়েকের মালিকানাধীন পিস টিভি ও তাঁর ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক ওঠে। এবং বাংলাদেশে পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধের ঘোষণা দেয় সরকার।

এর আগে অবশ্য গুলশান হত্যাকাণ্ডের পর ইসলামিক স্টেট (আইএস) সম্পর্কে বলেন ইসলামবিষয়ক বক্তা জাকির নায়েক। জাকির নায়েকের মন্তব্য, ‘ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া (আইএস) নামটিই অনৈসলামিক।’

জাকির নায়েক বলেন, ‘ইসলামিক স্টেট (আইএস) নামটি ব্যবহার করে আমরা আসলে ইসলামের নিন্দা করছি।’ তিনি এই  জঙ্গি সংগঠনটিকে ‘এন্টি ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া’ নামে অভিহিত করেন। আইএস নামটি ইসলামের শত্রুদের দেওয়া বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

জাকির নায়েক জানান, সৌদি আরবের মক্কায় বসেই তিনি শুনেছেন গুলশানের হত্যাকারীরা তাঁর অনুসারী এমন একটি বক্তব্য। সেই বক্তব্যটিকে মিথ্যা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘আমার ফেসবুক ফলোয়ারের বড় অংশই বাংলাদেশি। এ ছাড়া বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলের মানুষই বাংলায় প্রচারিত পিস টিভিতে আমাকে দেখেন। ৯০ শতাংশ বাংলাদেশি আমাকে চেনেন। প্রবীণ রাজনীতিক থেকে সাধারণ মানুষ, ছাত্র, শিক্ষকরা রয়েছেন সেই তালিকায়। আর এই বিপুল মানুষের ৫০ শতাংশ আমার গুণমুগ্ধ। এই অবস্থায় জঙ্গিরা যদি আমায় চেনে, তাহলে কি আমার খুব বেশি অবাক হওয়ার কথা? না।’

এছাড়া যত যা ই হোক, তিনি জঙ্গি আক্রমণ কোনোভাবেই সমর্থন করেন না বলে সাফ জানিয়েছেন। জাকির নায়েক আরো বলেন, ‘হত্যাকারীরা আমার বক্তব্যের সঙ্গে পরিচিত হতেই পারে। কিন্তু তার মানে এই নয় আমি তাঁদের অনুপ্রাণিত করেছি। আমি সাধারণত ধর্মীয় বই অনুসারে বক্তব্য দেই। আমার বক্তব্য শুনে তারা যদি সঠিক ইসলামকে বুঝতে না পারে সেটা তাদের দুর্ভাগ্য।’

ভারত ও দুবাইভিত্তিক পিস টিভিতে প্রতিদিনের টেলিভিশন অনুষ্ঠানে ইসলামের নানা বিষয় নিয়ে বক্তব্য দেন নায়েক। মুসলিম বিশ্বে তিনি একজন জনপ্রিয় বক্তা। ফেসবুকে তাঁর এক কোটি ৪০ লাখ ফলোয়ার রয়েছে। বিভিন্ন ভাষায় বিশ্বের ২০ কোটি মানুষ টিভিতে তাঁর অনুষ্ঠান দেখে।