‘সবই ছিল এরদোয়ানের দুর্বল পরিকল্পনা’
তুরস্কে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানচেষ্টা ঘটনার পর পরই স্বেচ্ছানির্বাসিত ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনের উপর ঘটনার দায় দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান। কিন্তু ঘটনার চব্বিশ ঘণ্টা পর তবে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গুলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ায় নিজ বাসায় সাংবাদিকদের ছোট্ট একটি দলকে তিনি এই বিষয়ে সাক্ষাৎকার দেন। সাক্ষাৎকারে বর্ষীয়ান এই ইসলামি চিন্তাবিদ এবং ধর্মীয় নেতা দাবি করেন,সবই ছিল এরদোয়ানের দুর্বল পরিকল্পনা।
গুলেনের এই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাদ্যম দ্য গার্ডিয়ান। সাক্ষাৎকার ছেপে গার্ডিয়ান জানিয়েছে, তাঁর এমন সাক্ষাৎকার বিরল। সাক্ষাৎকারে গুলেন বলেছেন, প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান যে অভিযোগ এনেছেন তা বিশ্ববাসী বিশ্বাস করবে বলে আমি মনে করি না। এমন অভ্যুত্থান পরিকল্পনা করে ঘটানো হয়ে থাকতে পারে। তবে এ জন্যই এটা ঘটানো হয়ে থাকতে পারে, যাতে গুলেনপন্থীদের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ আনা যায়।
গুলেনের এই কথাটির ব্যাখ্যা দিয়ে গার্ডিয়ান একটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে। যাতে উল্লেখ করা হয়, ফেতুল্লাহ গুলেন এবং তাঁর সমর্থকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এরদোয়ানের সরকারই পরিকল্পিতভাবে এ অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করেছে।
গুলেন আরো বলেন,‘তিনি বরাবরই গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তুরস্কে যখনই অভ্যুত্থান হয়েছে তখনই তিনি ব্যক্তিগতভাবে মর্মাহত হয়েছেন।’
গুলেন উল্লেখ করেন, ‘যত যাই হোক সেনাশাসন কখনো সঠিক পথ নয়। তুরস্ক এখন গণতন্ত্রের পথে আছে। জনগণ সেটা প্রমাণ করেছে। দেশকে সেখান থেকে পিছনে ফেরানো যাবে না।’
এদিকে গুলেনের সাক্ষাৎকারের পর তাঁর গণমাধ্যম বিষয়ক উপদেষ্টা আলিপ আসলানদোগান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তুরস্কের ঘটনার পর ফেতুল্লাহ গুলেনের নিরাপত্তায় উচ্চ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানচেষ্টার পর আলিপ আসলানদোগান বলেন, ‘তাঁর (গুলেন) সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সব শুনে তিনি জানিয়েছেন, এর আগে যেসব অভ্যুত্থান ঘটেছে তার সঙ্গে এ অভ্যুত্থান চেষ্টা তুলনা করা যায় না। এবার যে অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা হয়েছে তা দুর্বলভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে। দুর্বলভাবে পরিচালনা করা হয়েছে। সব কিছু দেখে মনে হয় সবই ছিল এরদোগানের হাতের কাজ।’