মানবাধিকার স্থগিত করল তুরস্ক
ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনায় তিন মাসের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর এবার মানবাধিকারের পরিসর সংকুচিত করল তুরস্ক। দেশটির সরকার মানবাধিকার সংক্রান্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনুসিদ্ধান্ত (কনভেনশন) স্থগিত করেছে।
ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী নুমান কার্তুলমাস স্থানীয় সময় আজ বৃহস্পতিবার বলেন, গত নভেম্বরে প্যারিসে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের হামলার পর ফ্রান্স যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তুরস্ক সেই পথ অনুসরণ করবে।
ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, এর আগে তুরস্কে তিন মাসের জন্য জরুরি অবস্থার ঘোষণা দিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেন, ‘এর মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ অভ্যুত্থান পরিকল্পনাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও আরো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সক্ষম হবে।’
তুরস্কের এনটিভিতে সম্প্রচারিত খবরে কার্তুলমাসের কয়েকটি মন্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়েছে। কার্তুলমাস বলেন, তুরস্কের জরুরি অবস্থা এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে শেষ হবে।
তিনি অভ্যুত্থান চেষ্টার সময় ‘প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিগত’ গোয়েন্দা ব্যর্থতাকে চিহ্নিত করেছেন। সেনাবাহিনীর পুনর্গঠনের কাজ চলছে বলেও কার্তুলমাস জানান।
স্থানীয় সময় গত ১৫ জুলাই দিবাগত রাতে তুরস্কের সেনাবাহিনীর একাংশের অভ্যুত্থানচেষ্টার পর প্রায় ১০ হাজার মানুষকে আটক করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সরকারি তথ্যমতে, সেনা অভ্যুত্থানচেষ্টার সময় ২৪৬ জন নিরস্ত্র মানুষ নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অভ্যুত্থানচেষ্টার ঘটনার পর ৫০ হাজার সরকারিকর্মী গ্রেপ্তার, পদচ্যুত ও সাময়িক বরখাস্ত হয়েছে। অভ্যুত্থানচেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগে গতকাল বুধবার ৯৯ সেনাসদস্যকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
সেনাদের অভ্যুত্থানচেষ্টার ঘটনার পর থেকে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ও কর্মীদের পদচ্যুত করা হয়েছে এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির প্রশাসন। এ ছাড়া শিক্ষার প্রয়োজনে বিদেশে ভ্রমণও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তুরস্কের গণমাধ্যম জানিয়েছে, ফেতুল্লাহ গুলেনের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৩৪ সাংবাদিকের নামের তালিকা করেছে দেশটির সরকার। এঁদের বিভিন্ন সভা-সেমিনারে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।