পুলিশ হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যুতে উত্তপ্ত বাল্টিমোর, কারফিউ
যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের বাল্টিমোরে পুলিশ হেফাজতে এক কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ দমনে গতকাল মঙ্গলবার কারফিউ জারি করা হয়েছে। তবে কারফিউ অমান্য করে রাস্তায় অবস্থান নেয় বিক্ষোভকারীরা। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। ২৫০ জন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ হেফাজতে মেরুদণ্ডে আঘাত পাওয়া কৃষ্ণাঙ্গ ফ্রেডি গ্রের (২৫) গত সোমবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পর এই দাঙ্গার ঘটনা ঘটে।
লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস ও বিবিসি জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার রাতে এক সপ্তাহের জন্য সারা শহরে এই কারফিউ জারি করা হয়েছে। কারফিউ অমান্য করে বিক্ষোভকারীরা রাতে রাস্তায় অবস্থান নেয়। কয়েকজন বিক্ষোভকারী পুলিশকে লক্ষ্য করে বোতল ছুড়ে মারে, বিভিন্ন জায়গায় আগুন দেয়। মোট ১৪৪টি গাড়িতে ও ১৫ ভবনে আগুন দেয়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও মরিচের গুঁড়ো ছুড়ে মারে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। এ ঘটনায় ২৫০ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কমপক্ষে ৩৪ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য প্রায় দুই হাজার ন্যাশনাল গার্ড ও এক হাজার পুলিশ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৬৮ সালের পর এই প্রথমবারের মতো বাল্টিমোরে ন্যাশনাল গার্ড পাঠানো হলো। বর্ণবাদবিরোধী মার্কিন নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র আততায়ীদের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার পর এই শহরে ন্যাশনাল গার্ড পাঠানো হয়।
সিএনএন জানিয়েছে, কারফিউ জারির পর মঙ্গলবার রাত ১০টা ৫৩ মিনিটে এক টুইট বার্তায় বাল্টিমোর পুলিশ বলেছে, অনুমতিপ্রাপ্ত গণমাধ্যমকর্মীরাই এ ঘটনার খবর সংগ্রহ করতে পারবেন। এর আগে কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল থেকে সাংবাদিকদের সরে যেতে বলেছিল। অন্যথায় গ্রেপ্তার করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সহিংস ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের সমালোচনা করেছেন। পাশাপাশি তিনি আফ্রো-আমেরিকান বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের বলপ্রয়োগকে একটি ‘ধীরে চলা সংকট’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ডেমোক্রেটিক নেতা হিলারি ক্লিনটন এটিকে ‘হৃদয়বিদারক’ বলেছেন।
এক সপ্তাহ গভীর অচেতন অবস্থায় ( কোমা) থাকার পর পুলিশ হেফাজতে ফ্রেডি গ্রে গত ১৯ এপ্রিল মারা যান। মেরুদণ্ডে কবে, কীভাবে তিনি আঘাত পেয়েছিলেন, তা জানতে তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় ছয় পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।