ব্রহ্মপুত্রের উপনদীর প্রবাহ বন্ধ করল চীন
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/10/01/photo-1475332453.jpg)
ব্রহ্মপুত্র নদের একটি উপনদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে চীন। বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ভারতের গণমাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে, ইয়ারলুং জাংবো (ব্রহ্মপুত্র) নদীতে চীনের সবচেয়ে ব্যয়বহুল জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের অংশ হিসেবে জিয়াবুকু উপনদী বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পশ্চিম তিব্বরের আংশিক হিমবাহ থেকে উৎপন্ন হওয়া ব্রহ্মপুত্র নদের ওপরের অংশ ইয়ারলুং জাংবো নামে পরিচিত।
গত কিছুদিন ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার মধ্যে চীন থেকে ভারত হয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করা সিন্ধু নদের পানিপ্রবাহ বন্ধের ইঙ্গিত দিয়ে আসছে ভারত। এর মধ্যেই চীন থেকে ভারতে প্রবেশ করা ব্রহ্মপুত্রের একটি উপনদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দিল চীন।
উপনদীর পানি বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণার পর থেকেই ব্রহ্মপুত্র নদের পানিপ্রবাহের দিকে নজর রাখছে ভারত। ব্রহ্মপুত্র ভারত ও বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ নদগুলোর মধ্যে অন্যতম। ভারতের অরুণাচল ও আসাম রাজ্যে প্রবাহিত হয়ে এটি বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
ব্রহ্মপুত্র নদের একটি উপনদীতে পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দেওয়ায় এর প্রভাব সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি। ভারত বা বাংলাদেশের ওপর এর কোনো কেমন প্রভাব পড়তে পারে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
লালহো জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রশাসন ব্যুরোর প্রধান ঝ্যাং ইয়ুনবো জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৪০ মিলিয়ন ডলার বা পাঁচ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা। ২০১৪ সালের জুন মাসে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০১৯ সালে। এই বাঁধের মাধ্যমে ২৯৫ মিলিয়ন কিউবিক মিটার পর্যন্ত পানি সংরক্ষণ করা যাবে এবং এর মাধ্যমে ৩০ হাজারের বেশি জমিতে সেচ সুবিধা দেওয়া যাবে।
১৮৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের জিয়াবুকু নদী আন্তসীমান্ত নদী না হওয়ায় চীন ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মধ্যে এটি পড়ে না। দেশ দুটির মধ্যে কোনো পানিচুক্তি নেই তবে বন্যার তথ্য আদানপ্রদানের একটি সমঝোতাপত্র রয়েছে। পানিবণ্টন ইস্যুতে ২০০৭ সাল থেকে বেশ কয়েকবার আলোচনায় বসেছে চীন ও ভারত। তবে সব সময়ই চীন ভারতকে পানিপ্রবাহের বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে। এ ছাড়া এবারের এই পানিপ্রবাহ বন্ধের বিষয়টিও দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করছে চীন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুংইং বলেন, ‘ভারত ও চীনের মধ্যে যে সমঝোতার সম্পর্ক ও বোঝাপড়া আছে তা বেশ ভালো। দুই দেশের সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরো ভালো হবে বলে আমরা আশা করছি। আমরা সব সময়ই বন্যা প্রতিরোধ সম্পর্কে ভারতকে তথ্য দিয়ে এসেছি। যা দেশটিতে বন্যা প্রতিরোধ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে যথেষ্ট সহায়তা করেছে। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে এই অঞ্চলে আমাদের সহায়তা কাজে লাগে এবং সবকিছু মসৃণভাবে চলে।’