সালাহ উদ্দিনকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে গ্রেপ্তারের অনুরোধ জানিয়ে ভারতকে একটি রেড নোটিশ পাঠিয়েছে আন্তর্জাতিক পুলিশের সংস্থা ইন্টারপোলের ঢাকা ইউনিট। মেঘালয় রাজ্য পুলিশের মহাপরিচালক (ডিজিপি) রাজীব মেহতার বরাত দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া এ-সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করে।
গত সোমবার ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁর কাছে কোনো বৈধ কাগজ না পাওয়ায় মেঘালয় পুলিশ তাঁকে আটক করে।
মেঘালয়ের পুলিশপ্রধান রাজীব মেহতা বার্তা সংস্থা আইএএনএসকে বলেছে, ‘গতকাল বুধবার আমরা সালাহ উদ্দিন আহমেদকে গ্রেপ্তারের অনুরোধ জানিয়ে ঢাকা ইন্টারপোলের কাছ থেকে একটি রেড অ্যালার্ট পেয়েছি। আমরা নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোকে (সিবিআই) বাংলাদেশের এ অনুরোধের কথা জানিয়েছি।’
এর আগে রাজীব মেহতার বরাত দিয়ে শিলং টাইমস জানিয়েছে, ‘গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তি সম্পর্কে আমরা সিবিআইয়ের (ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো) কাছ থেকে মঙ্গলবার ইন্টারপোলের অ্যালার্ট পেয়েছি। ভবিষ্যতে আমরা কী পদক্ষেপ নেব, সে ব্যাপারে সিবিআইয়ের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি।’
রাজ্যের পুলিশপ্রধান জানান, ইন্টারপোলের এই অ্যালার্টের পরিপ্রেক্ষিতে মেঘালয় পুলিশ তাদের জানিয়েছে, সালাহ উদ্দিন এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
সালাহ উদ্দিন আহমেদের কাছ থেকে ফোন পেয়েছেন এবং তিনি শিলংয়ের একটি হাসপাতালে রয়েছেন বলে তাঁর স্ত্রী হাসিনা আহমেদ গত মঙ্গলবার ঢাকায় সাংবাদিকদের জানানোর পর বাংলাদেশ ইন্টারপোল ভারতের ইন্টারপোলকে এই অনুরোধ জানিয়েছে।
মেঘালয়ভিত্তিক দৈনিক শিলং টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, সালাহ উদ্দিন আহমেদের ওপর কঠোর নজরদারি রাখতে ভারতের মেঘালয়ের পুলিশকে অ্যালার্ট জারি করেছে আন্তর্জাতিক পুলিশের সংস্থা ইন্টারপোল। শিলং সিভিল হাসপাতালে বিচারাধীন কয়েদিদের জন্য বরাদ্দ থাকা কক্ষে সালাহ উদ্দিনকে রাখা হয়েছে। তাঁর জন্য কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গত সোমবার বিএনপির এই নেতা কোনো বৈধ কাগজ ছাড়া ভারতে প্রবেশ করেন। তাঁকে আদালতে তোলা হবে বলেও পত্রিকাটি জানিয়েছে।
সিবিআই সালাহ উদ্দিন আহমেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে এখানে আসবে কি না—জানতে চাইলে রাজীব মেহতা বলেন, তদন্ত সংস্থার কাছ থেকে এ ধরনের কোনো তথ্য তাঁর কাছে আসেনি। তিনি বলেন, ‘যেহেতু সালাহ উদ্দিন ফরেনার্স আইন ভঙ্গ করেছেন, সে কারণে সিভিল হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তাঁকে আদালতে তুলবে মেঘালয় পুলিশ।’ তিনি জানান, সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী এখনো মেঘালয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।
রাজীব মেহতা জানান, গত সোমবার গ্রেপ্তারের সময় বাংলাদেশের এই রাজনীতিকের কাছে শুধু কিছু ওষুধ ছিল।
সালাহ উদ্দিন আহমেদ কীভাবে বৈধ কাগজ ছাড়া শিলংয়ে প্রবেশ করলেন, সে ব্যাপারে তদন্ত করছে মেঘালয় পুলিশ।
গত ১০ মার্চ থেকে ‘নিখোঁজ’ ছিলেন সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তাঁকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে তাঁর পরিবার ও দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে। তবে তাঁকে আটক করা হয়নি বলে দাবি করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান চেয়ে ১১ মার্চ রাতে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গুলশান ও উত্তরা পশ্চিম থানায় যান তাঁর স্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ। তবে কোনো থানাই তাঁর জিডি গ্রহণ করেনি।
রাজধানীর উত্তরার একটি বাড়ি থেকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ১০ মার্চ—এমন অভিযোগ করে থানা পুলিশের পাশাপাশি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন সালাহ উদ্দিনের পরিবার।