ট্রাম্পের জয়ে অভিবাসীদের দুঃস্বপ্নের শঙ্কা

স্বপ্ন ছিল তাঁদের, স্বপ্ন ছিল বিশ্বের অন্যতম উন্নত একটি রাষ্ট্রে বসবাসের। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় তাঁদের স্বপ্নকে প্রায় ভেঙে দিয়েছে।
এই স্বপ্নবাজদের অধিকাংশই বয়সে যুবা, যাঁরা তাঁদের বাবা-মায়ের সঙ্গে উন্নত জীবনের স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন বিভাগের তথ্যমতে এই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সংখ্যা ১৮ লাখের মতো। যাদের অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন, কারণ ২০১২ সালে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নিজের নির্বাহী আদেশবলে তাঁদের স্থায়ী বাসিন্দা করার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন।
২০১২ সালে প্রেসিডেন্ট ওবামার ‘স্বপ্নের আইন’ নামে পরিচিত ওই প্রস্তাবিত আইনটির উদ্দেশ্য ছিল, প্রথম ও দ্বিতীয় প্রজন্মের যুক্তরাষ্ট্রবাসীকে নাগরিকত্ব দেওয়া। যুক্তরাষ্ট্রের ‘অর্থনীতি, নিরাপত্তা, সর্বোপরি জাতিসত্তার জন্য ভালো’ অভিহিত করে এ আইনটির উদ্দেশ্যই ছিল অভিবাসীসহ প্রথম প্রজন্মকে নাগরিকত্ব দেওয়া।
কিন্তু নতুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জামানায় এসে এই ‘স্বাপ্নিক’ গোষ্ঠীদের প্রায় সবাই বিপন্ন বোধ করছেন। কারণ প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগেই ট্রাম্প প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, এই অনিবন্ধিত অভিবাসীদের তিনি চিরতরে দেশছাড়া করবেন।
এমন কয়েকজন প্রথম প্রজন্মের যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব-প্রত্যাশী তরুণ সিএনএনকে জানিয়েছেন তাঁদের স্বপ্নভঙ্গের গল্প।
যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে বসবাসকারী ইটজেল (২২) যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন শিক্ষার্থী হিসেবে। ওবামার ২০১২ সালের ‘স্বপ্নের আইন’ অনুযায়ী তিনি পরিকল্পনা করছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী আবাসনের। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় আসায় তাঁর সেই স্বপ্ন ভেঙে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। আগামীর যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসীদের জন্য বিরূপ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন তিনি।
কলরাডো অঙ্গরাজ্যের গ্রান্ড জংশনে থাকেন মেক্সিকান বংশোদ্ভূত নারী এস্তরেলা (৩২)। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন তাঁর সৎবাবার সুবাদে। সঠিকভাবে নাগরিকত্ব না পাওয়ায় তিনি থেকে গেছেন অনিবন্ধিত অভিবাসী হিসেবে। তিন সন্তানের এই নারী থিতু হয়েছেন কলরাডোয়। সিএনএনের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি জানালেন, তাঁর সন্তানদের মধ্যে পাঁচ বছর বয়সী বড় ছেলে ট্রাম্পকে একজন খারাপ মানুষ হিসেবেই জানে। তার ধারণা, এই ব্যক্তি (ট্রাম্প) তার বাবা-মাকে এই দেশ থেকে তাড়াতে চায়।
আরেকজন ‘ব্যথিতহৃদয়’ অভিবাসনপ্রত্যাশী হলেন শিকাগোর বাসিন্দা রোসা। মেক্সিকোয় জন্ম এই সমকামী তরুণীও স্বপ্ন দেখেছিলেন ‘সব পেয়েছির দেশে’ নাগরিকত্ব লাভের। কিন্তু ট্রাম্পের আমেরিকা তাঁর জন্য বিরূপ হয়ে উঠতে পারে বলে ধারণা তাঁর। সিএনএনকে তিনি বলেন, ট্রাম্পের জয় তাঁর কাছে যেন এক দুঃস্বপ্ন।