যা বললেন সালাহ উদ্দিন
'এখনো জীবিত আছি’ –সাংবাদিকদের সাথে এভাবেই কথা শুরু করলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং সিভিল হাসাপাতালে কারাবন্দিদের জন্য নির্ধারিত কক্ষ থেকে আজ সোমবার দুপুরে শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালের মূল ভবনে। সেখানে তাঁর সিটিস্ক্যান করা হয়। এ সময় হাসপাতালের বারান্দায় অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
কীভাবে শিলং এলেন তার কিছু মনে করতে পারেন কি না, জানতে চাইলে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমি পুলিশকে বলেছি..।আমি তো.. চোখ বান্ধা ছিল আমার, হাত বান্ধা ছিল। একটা লং জার্নি। মনে হয় ১২-১৪ ঘণ্টার হবে। দুই ঘণ্টা হয়তো স্টপেজ ছিল, মনে হয়। এইখানে শিলং গলফ কোর্সের পাশে আমাকে ফেলে রাখে। তারপর... কিছু লোককে বললাম, আমাকে একটু পুলিশ স্টেশনের দিকে নিয়ে যাও অথবা পুলিশকে খবর দাও, আমার এই এই অবস্থা।’urgentPhoto
স্বেচ্ছায় থানায় এসেছেন কি না -এমন প্রশ্নের জবাবে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘হ্যাঁ হ্যাঁ...তখন তারা পুলিশকে কল করল। আমি গেলাম। তো তাদের আমার হিস্ট্রি বলার পর তারা হয়তো মনে করেছে, আমি মেন্টাল পেশেন্ট।’
দেশে ফিরতে চান? নাকি আরো চিকিৎসা করাতে চান –এ কথা জানতে চাইলে সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘দেশে তো এখন রেড অ্যালার্ট জারি করেছে ইন্টারপোল। এটা গভর্নমেন্টের উচিত হয় নাই। আমি তো কোনো.. মানে.. সাজাপ্রাপ্ত দাগী অ্যাবসকন্ডিং কোনো আসামি না। তো, কেন করছে, আমি তো জানি না।’
এ সময় সালাহ উদ্দিন আরো জানান, দেশে ফিরতে চান তিনি।
৬৩ দিন নিখোঁজ থাকার পর গত ১১ মে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে সন্ধান পাওয়া যায় বিএনপির নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদের। সেখানে রাস্তায় ‘ইতস্তত ঘোরাঘুরির সময় স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে’ শিলং পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে বলে জানায় শিলংয়ের গণমাধ্যমগুলো। ওই সময় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া আত্মীয়দের কাছে সালাহ উদ্দিন দাবি করেন, কয়েকবার গাড়ি পরিবর্তন শেষে তাঁকে শিলংয়ে ফেলে যায় অপহরণকারীরা। সেখানে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর নিয়ে তিনি নিজেই পুলিশের কাছে যান।
বর্তমানে গত মঙ্গলবার থেকে শিলং সিভিল হাসপাতালে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ জি কে গোস্বামীর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে সালাহ উদ্দিনের। শিলংয়ের পুলিশ কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আজ করা সিটিস্ক্যানসহ অন্য কয়েকটি পরীক্ষার রিপোর্টের ওপরই নির্ভর করছে তাঁকে ঠিক কখন বা কবে আদালতে হাজির করা হবে সে বিষয়টি।
সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ গতকাল রাতেই কলকাতা পৌঁছেছেন। গৌহাটি হয়ে স্থানীয় সময় আজ বিকেলে তাঁর শিলং পৌঁছানোর কথা রয়েছে। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন সালাহ উদ্দিনের ভগ্নিপতি মাহবুবুল কবির মুনমুন।
গত ১২ মে সালাহ উদ্দিনকে শিলং সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগের দিন তাঁকে উদ্ধারের পর একটি মানসিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। এ দিনই বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশ করায় ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী সালাহ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে মেঘালয় পুলিশ।