‘আইএসে যোগ দিয়ে ভুল করেছিলাম’
জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিয়ে জীবনে সবচেয়ে বড় ভুল করেছেন বলে জানিয়েছে সংগঠনটির সাবেক সদস্যরা। ইরাকে কারাবন্দি আইএসের তিন সদস্যের সাক্ষাৎকারভিত্তিক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে আইএস সদস্য আবদেল রহমান আল-আজির সাক্ষাৎকার তুলে ধরা হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন আইএসের হয়ে কাজ করেছেন।
সেখানে আবদেল বলেছেন, মানুষ হত্যার কাজটি তাঁর জন্য ছিল কঠিন। কিন্তু আইএসের একজন সদস্য হিসেবে তাঁকে তাঁর স্থানীয় আমির বা কমান্ডারের নির্দেশনা অনুসরণ করতেই হতো। এই আদেশেই একদিন তিনি ঠান্ডা মাথায় একজনকে খুন করতে পেরেছিলেন।
নির্দেশ অনুযায়ী, আল-আজি তাঁর অপর এক আইএস সঙ্গীর সঙ্গে সোয়াত-সদস্যের বাড়িতে যান। মাইক্রোবাসে করে তার সহপরিকল্পনাকারীর সঙ্গে বেরিয়ে যান। তারপর গুলি করে তাদের লক্ষ্যবস্তুতে থাকা ব্যক্তিকে হত্যা করেন। আল-আজি বলেন, হত্যা করতে পেরে তিনি গর্ববোধ করেছিলেন। কিন্তু এখন হাতকড়া পরে বসে আছেন। তিনি বলেন, তিনি তাঁর কাজের জন্য অনুতপ্ত এবং বিশ্বাস করেন যে তাঁরা ভুল করেছেন।
আল-আজি ওই তিনজনের মধ্যে একজন যাঁরা উত্তর ইরাকের একটি গোপন এলাকায় কুর্দিস কারাগারে সিএনএনের সঙ্গে কথা বলেছেন।
প্রতিবেদনে লাইথ আহমেদ নামের এক ব্যক্তির আইএসের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে লাইথ আহমেদ বলেন, ২০১৪ সালে সুন্নি অধ্যুষিত হাওইজা শহরের কাছে তাঁর গ্রাম যখন আইএস দখলে নেয় তখন তিনি রংমিস্ত্রির কাজ করতেন। তিনদিন পর এক ব্যক্তি তাঁর কাছে আসেন এবং আইএসে যোগ দিলে তাকে বেতন দেওয়া হবে বলে প্রস্তাব দেন। নিরক্ষর, অভাবী আহমেদ বলেন, তিনি কোনো কিছু না ভেবেই ওই চুক্তিতে রাজি হয়ে আইএসে যোগ দেন।
লাইথ আহমেদ বলেন, ‘আমি ভুল করেছি। আমি জানতাম না কীভাবে পড়তে হয়, লিখতে হয়। আমি সব কিছুই ভুল করেছি।’ তিনি বলেন, ‘আমি কসম করে বলছি তারা আমাকে ঠকিয়েছে। আমি কিছুই জানি না।’
লাইথ আহমেদ আরো বলেন, ‘আমি জানি না আমার ভাগ্যে কী আছে, আশা করছি দ্রুত একটা কিছু হবে। আমি আদালতে যাব এবং আশা করছি কোনো একদিন আমি আবার আমার স্ত্রী-সন্তানের কাছে ফিরে যেতে পারব।’
২০ বছর বয়সী আকরাম আহমেদ সেলফোন মেরামতের দোকানে কাজ করতেন, যখন আইএসের এক সদস্য তাকে চাকরির অফার করেছিলেন। ইসলামি আইন-কানুনকে ভালোবেসে তিনি আইএসে যোগ দেন।
আহমেদ বলেন, ‘আমি ছিলাম শরিয়া আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ধর্মীয় খিলাফত প্রতিষ্ঠার ধারণা আমাকে প্রভাবিত করেছে।’
আকরাম আরো বলেন, ‘যা কিছু ঘটেছে তার জন্য আমিই দায়ী। সবকিছু আমার ভুলের কারণেই ঘটেছে। আমি সব সময় এটা নিয়ে ভাবতে থাকি।’