খেরসনে বিশাল বাঁধ উড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া, দাবি ইউক্রেনের

Looks like you've blocked notifications!
খেরসনের নোভা কাখোভকা শহরের বিধ্বস্ত বাঁধ। ছবি : এএফপি

রুশ বাহিনী খেরসনের একটি বড় বাঁধ উড়িয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। তবে খেরসনে অঞ্চলে রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত অংশের নোভা কাখোভকা শহরে মস্কো নিযুক্ত কর্মকর্তা বাঁধ ধ্বংসের জন্য ইউক্রেনীয় বাহিনীর গোলাবর্ষণকে দায়ী করেছেন।

ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ড মঙ্গলবার (৬ জুন) নিজের ফেসবুক পেজে বলেন, ‘কাখোভকা (বাঁধ) রুশ দখলদার বাহিনী উড়িয়ে দিয়েছে। ধ্বংসের মাত্রা, পানির গতি ও বিস্তৃতি এবং সম্ভাব্য প্লাবিত এলাকাগুলো চিহ্নিত করা হচ্ছে।’

খেরসন অঞ্চলের ইউক্রেনীয় সামরিক প্রশাসন ডেনিপার নদীর ডান তীরের বেশ কয়েকটি গ্রাম থেকে লোকজনকে সরে যেতে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। কারণ বাঁধটি ধ্বংসের পর পানির স্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।

প্রশাসনের টেলিগ্রাম পোস্টে বলা হয়, ‘পানির স্তর বাড়ছে এবং যারাই বিপজ্জনক অঞ্চলে আছেন, তাদের অবশ্যই সব বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি বন্ধ করে দিতে হবে; নথি ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে নিতে হবে; প্রিয়জন ও পোষা প্রাণীর জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে এবং উদ্ধারকারী এবং পুলিশ সদস্যদের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।’

ইউক্রেনের ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড ডিফেন্স কাউন্সিলের সেক্রেটারি ওলেক্সি দানিলভ বলেন, বাঁধে হামলার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডেকেছেন।

পরে বাঁধটি ধ্বংস করার জন্য রাশিয়ার বাহিনীকে অভিযুক্ত করেন জেলেনস্কি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘পুরো বিশ্বকে অবশ্যই ইউক্রেনীয় ভূমির প্রতিটি কোণা থেকে তাদের বিতাড়িত করতে নিশ্চিত হতে হবে।’

জেলেনস্কি টুইটারে লেখেন, ‘তাদের (রুশ বাহিনী) জন্য এক মিটারও ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়, কারণ তারা প্রতিটি মিটার  সন্ত্রাসের জন্য ব্যবহার করে। সন্ত্রাসীরা পানি, মিসাইল বা অন্য কিছু দিয়ে ইউক্রেনকে আটকাতে পারবে না।’

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস সূত্রের উদ্ধৃত দিয়ে জানায়, বাঁধটি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং অঞ্চলটি প্লাবিত হচ্ছে।

রাশিয়ার আরেকটি রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আরআইএ নভোস্তি নোভা কাখোভকার মস্কো নিযুক্ত মেয়র ভ্লাদিমির লিওন্তিয়েভকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘বাঁধটি গোলাগুলির কারণে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে, যার জন্য তিনি ইউক্রেনকে দায়ী করেছেন।‘ বার্তা সংস্থার বরাতে তিনি বলেন, বাঁধে ‘বেশ কয়েকবার আঘাত’ হানা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, কাখোভকা বাঁধের চারপাশে একের পর এক প্রচণ্ড বিস্ফোরণ হচ্ছে৷ বাঁধের ধ্বংসাবশেষের মধ্য দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। যদিও তাৎক্ষণিক ভিডিওগুলোর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

৩০ মিটার উচ্চতার এবং ৩ দশমিক ২ কি.মি লম্বা বাঁধটি ১৯৫৬ সালে কাখোভকা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অংশ হিসেবে ডিনেপার নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছিল।