মিরর গ্রুপের সাংবাদিক ফোন হ্যাক করেছিল, প্রমাণ দেখাতে পারেননি প্রিন্স হ্যারি

Looks like you've blocked notifications!
প্রিন্স হ্যারি। ছবি : এএফপি

মিডিয়া টাইকুন রুপার্ট মারডকের মালিকানাধীন যুক্তরাজ্যের একটি গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে মোবাইল হ্যাকিংয়ের অভিযোগ তুলেছিলেন ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স হ্যারি। এ নিয়ে মামলা গড়ায় যুক্তরাজ্যের সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত। সেই মামলায় শুনানিতে আদালতে সাক্ষ্যও দিয়েছেন ডিউক অব সাসেক্স। তবে, আদালতে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি হ্যারি। আজ বুধবার (৭ জুন) এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

প্রতিবেদনে গণমাধ্যমটি জানায়, মিরর গ্রুপের একটি পত্রিকায় কাজ করা একজন সাংবাদিক হ্যারি ফোনে আড়ি পেতেছিলেন, এমন কোনো প্রমাণ আদালতকে দেখাতে পারেননি ডিউক অব সাসেক্স। তবে, ওই সাংবাদিক একবিংশ শতাব্দির একটি দশকে অনেক সেলিব্রিটির ভয়েসমেইল হ্যাক করেছিল দ্য মিররের আইনজীবী ব্যারিস্টার অ্যান্ড্রু গ্রিন কেসি স্বীকার করেছেন। অ্যান্ড্রু বলেন, ‘ভয়েসমেইল মেথডে তার (হ্যারি) ফোন হ্যাক করা হয়েছিল, এই প্রমাণ দেখাতে অক্ষম হয়েছে হ্যারি।’

শুনানির সময় হ্যারিকে উদ্দেশে করে অ্যান্ড্রু বলেন, ‘আপনার মোবাইল ফোনে যেকোনো সময়ের কল ডেটার একটি আইটেম নেই।’

ব্রিটিশ রাজপরিবারের এই সদস্যের অভিযোগ, আড়িপাতার জন্য বার্নার ফোন ব্যবহার করেছিলেন মিররের সাংবাদিক। আড়িপাতার পর সেই ফোন ধ্বংস করে দেয় তারা। কোনো রেকর্ড যেতে না থাকে সেজন্য ফোনটি তারা ধ্বংস করেছিল।

ফোন হ্যাকিংয়ের শুনানির জন্য আজ হাইকোর্টে আসেন হ্যারি। আদালতে এসে সাক্ষ্য দেন তিনি। তাকে প্রশ্নে জর্জরিতও করা হয়।

ডিউক অব সাসেক্স আদালতকে বলেন, ‘আমার ফোন ডেইলি মিরর, সানডে মিরর ও পিপল ট্যাবলয়েডের সাংবাদিক হ্যাক করেনি বলে  বিচারক যদি সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে আমার সঙ্গে অবিচার হবে।’ 

হ্যারি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমার ফোন হ্যাকিং করা হয়েছিল। সেই সময়ে অন্তত তিনটি পত্রিকাজুড়ে আমার কথাই লেখা হতো। মিরর গ্রুপ হ্যাকিং করার বিষয়টি স্বীকারও করেছে। এরপরও যদি আমার ও অন্যান্য লোকদের বিরুদ্ধে রায় যায় তাহলে আমাদের সঙ্গে অবিচার হবে।’

প্রমাণগুলো ধ্বংস করা হয়েছে অভিযোগ করে ডিউক অভ সাসেক্স বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, তারা এটি লুকাতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেবে।’ হ্যারি আরও দাবি করেন, সাংবাদিকরা ভয়েসমেইল হ্যাক করে টেলিভিশন উপস্থাপক ক্যারোলিন ফ্ল্যাকের সঙ্গে তার গোপন বৈঠক সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন।

ব্রিটিশ পরিবারের এই সদস্য বলেন, ‘আমি যখন আমার বন্ধু ফ্ল্যাকের সঙ্গে দেখা করতে তার বাড়ি যায়, তখন আইকন পিকচার্সের একজন বাড়ির বাইরে থেকে আমার ছবি তুলেছিল। এই ফটো এজন্সি বছরের পর বছর ধরে আমাকে অনুসরণ করেছিল। তারা কীভাবে জানত, আমি কোথায় যাচ্ছি।’

ওই ছবিটি তোলার বেশ কয়েকদিন পরে এটি ছাপা হয়। যেখানে সাংবাদিক ক্যাটি হিন্ড ‘হ্যারি ডেট উইথ গ্ল্যাডিউটর স্টারস’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন লেখেন। হ্যারি বলেন, ‘আমার ওই প্রতিবেদনটি বেশ মনে রয়েছে। আমার বন্ধু ফ্ল্যাক এখন আর আমাদের সঙ্গে নেই। ২০২০ সালে সে আত্মহত্যা করে।’

সাক্ষ্য দেওয়ার সময় ডিউক অব সাসেক্স বলেন, ‘আমার ওই প্রতিবেদনটি ও ছবিগুলোর কথা খুব স্পষ্টভাবে মনে আছে। কারণ, সেই সময়ে আমি মর্মাহত হয়েছিলাম। আইকন পিকচার্সের দুই ফটোগ্রাফার জানত, আমরা কোথায় থাকব। ইতোমধ্যে তারা সেখানে ছিল, অপেক্ষা করছিল আমাদের পৌঁছানোর জন্য। তারা একটি গাড়ির নিচে লুকিয়ে ছিল।