সৌদি-ইরান চুক্তি পুনর্মিলনের নতুনধারা : চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
ইরানের রাজধানী তেহরানে সৌদি আরব ও ইরানের সম্পর্ক নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখছেন একজন পাঠক। ছবি : এএফপি

চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে আপসকে মধ্যপ্রাচ্যে ‘পুনর্মিলনের নতুনধারা’র সূচনা হিসেবে অভিহিত করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। পাশাপাশি তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে তার দেশ তেহরানের মূল স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সমর্থন অব্যাহত রাখবে।

রোববার (২০ আগস্ট) চীনের শীর্ষ এই কূটনীতিক ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানকে ফোন করে এই মন্তব্য ও সমর্থনের কথা জানান। চীনের সরকারি বার্তা সংস্থা শিনহুয়ার বরাত দিয়ে কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরা এই সংবাদ জানিয়েছে।

ওয়াং ই আমির আব্দুল্লাহিয়ানকে জানান, তার দেশ সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে ইরানের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের প্রশংসা করে বিশেষ করে জেদ্দায় সৌদি প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে তার বৈঠকের বিষয়ে।

ওয়াং ই প্রতিশ্রুতি দেন যে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর নিজস্ব জাতীয় স্বার্থে সম্পর্ক তৈরির পথ খুঁজে নিতে, নিজেদের মধ্যে  যোগাযোগ ও সংলাপ মজবুত করতে, নিজস্ব উন্নয়ন ও ঐক্য নিশ্চিতে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে বন্ধুত্ব বাড়াতে চীন কাজ করে যাবে। 

গত মার্চ মাসে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে এই আপসের ক্ষেত্র তৈরি করে দেয় চীন। দেশটি জানায়, বছরের পর বছর থেকে চলতে থাকা ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, ইয়েমেন ও বাহরাইনসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অস্থিতিশীলতা ও তিক্ত শত্রুতার অবসানে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তেহরান ও রিয়াদের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খারাপ হতে থাকা সম্পর্কের কারণেই মূলত তারা সম্পর্ক তৈরির এই নতুন পরিকল্পনা নিয়েছে।

ইরানি কর্মকর্তারা বলছেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামিনি চাইছেন পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে আসার পর যুক্তরাষ্ট্রের মদদে তার দেশকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করার প্রয়াস সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে কিছুটা হলেও লাঘব হবে।

অন্যদিকে, যৌথ আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিষয়ক যে কোনো মার্কিন আশ্বাসের ওপর আর ভরসা করতে পারছে না সৌদি আরব। পাশাপাশি তারা চাইছে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করতে যদিও ইরানের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক বেশ ভাল যাচ্ছে।

এদিকে, আপসের পর ইরান ও সৌদি আরব দুদেশই একে-অন্যের দেশে তাদের দূতাবাস পুনরায় খোলার সিদ্ধান্ত নেয়। এছাড়া, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান তেহরান সফরের জন্য ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।

রোববার ওয়াং ই’র সঙ্গে টেলিফোন আলাপে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহিয়ান ইরান ও সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চীনের গঠনমূলক ভূমিকার জন্য দেশটির প্রতি তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এছাড়া ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক চুক্তির বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান। জবাবে ওয়াং ই চুক্তি বাস্তবায়নে ও পারমাণবিক ইস্যুটির সমাধানে তার প্রত্যাশার কথা জানান।