ক্ষমতা হারানোর পর সাহায্য চাইলেন গ্যাবনের প্রেসিডেন্ট

Looks like you've blocked notifications!
গ্যাবনের প্রেসিডেন্ট আলি বঙ্গো ওন্দিম্বা। ফাইল ছবি : এএফপি

মধ্য আফ্রিকার দেশ গ্যাবনে জাতীয় নির্বাচনের ফল বাতিল করে বিজয়ী প্রেসিডেন্ট আলি বঙ্গো ওন্দিম্বাকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে নিয়েছে দেশটির এক দল সামরিক কর্মকর্তা। ক্ষমতাগ্রহণের পরই গৃহবন্দী করা হয় বঙ্গোকে। গৃহবন্দি হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর সাহায্য চাইলেন এই ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট। আজ বুধবার (৩০ আগস্ট) এ তথ্য জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভিডিও বার্তায় বঙ্গো গৃহবন্দি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওই ভিডিও বার্তায় নিজ দেশের জনগণকে অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। গ্যাবনের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি আলি বঙ্গো গ্যাবনের পদচ্যুত প্রেসিডেন্ট, আমি বিশ্বের সবার কাছে একটি বার্তা পৌঁছে দিতে চাই, তাদের আওয়াজ তোলার জন্য আহ্বান জানাই। এখানে যারা রয়েছে তারা আমাকে ও আমার পরিবারের সবাইকে গ্রেপ্তার করেছে। আমার ছেলেকে আরেক জায়গায় রাখা হয়েছে। আমার স্ত্রীকে অন্য একটি প্রাসাদে রাখা হয়েছে। বর্তমানে আমি আমার আবাসস্থলে রয়েছি। কি হচ্ছে আমি জানি না। আমি সবাইকে আওয়াজ তুলতে বলছি। ধন্যবাদ।’

গ্যাবনে থাকা আল-জাজিরার সংবাদদাতা বলেন, ‘রাজধানী লিব্রেভিলেতে মানুষ জড়ো হয়েছে। তারা জাতীয় পতাকা নিয়ে উৎসব করছে।’

গ্যাবনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম ‘গ্যাবন ২৪’ এ উপস্থিত হয়ে অভ্যুত্থানের পরিকল্পনাকারী সামরিক কর্মকর্তারা বলেন, ‘দেশের সমস্ত নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রতিনিধিত্ব করছি আমরা। নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব সীমান্ত বন্ধ করা হয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙে দেওয়া হয়েছে।’ পাশাপাশি সরকার, সিনেট, জাতীয় পরিষদ, সাংবিধানিক আদালত এবং নির্বাচনি সংস্থাগুলোকে বিলুপ্তের ঘোষণা করে তারা।

এক সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘দায়িত্ব-জ্ঞানহীন, অপ্রত্যাশিত শাসনব্যবস্থার ফলে সামাজিক সংহতির ক্রমাগত অবনতি ঘটছে, যা দেশকে বিশৃঙ্খলার দিকে নিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি করেছে… আমরা বর্তমান শাসনের অবসান ঘটিয়ে শান্তি রক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

এদিকে, গ্যাবনের বিষয়ে আলোচনা করা হবে জানিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতির প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, ‘জোটের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা গ্যাবনের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন।’ টলেডোতে ইইউ প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের একটি বৈঠকে বোরেল বলেন, ‘এটি সত্য হলে, আরেকটি সামরিক অভ্যুত্থান সমগ্র অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা বাড়াবে। পুরো এলাকা, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র থেকে শুরু করে মালি, বুরকিনা ফাসো, নাইজার, এখন সম্ভবত গ্যাবন—খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে।’

‘সেখানে কী ঘটছে এবং কীভাবে আমরা এই দেশগুলোর বিষয়ে আমাদের নীতি সমন্বয় করতে পারি, সে সম্পর্কে মন্ত্রীদের গভীর চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। এটি ইউরোপের জন্য একটি বড় সমস্যা’, বলেন বোরেল।

গত বছর কমনওয়েলথ জোটে যোগ দিয়েছিল গ্যাবন। মধ্য আফ্রিকার দেশটির অভ্যুত্থানের বিষয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছে সংগঠনটি। পাশাপাশি পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছে তারা।

কমনওয়েলথের মহাসচিব প্যাট্রিকা স্কটল্যান্ড বলেন, ‘পরিস্থিতি শঙ্কার। আমরা তা পর্যবেক্ষণ করছি। সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সর্বদা আইনের শাসন এবং গণতন্ত্রের নীতিগুলিকে সমুন্নত রাখতে হবে।’