ক্যাপিটল হিল দাঙ্গা : প্রাউড বয়েজের দুই শীর্ষনেতার জেল

Looks like you've blocked notifications!
যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলের ছবিটি এএফপি থেকে নেওয়া

২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে হামলা চালায় সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা। এ ঘটনায় সশস্ত্র সংগঠন প্রাউড বয়েজের দুই শীর্ষস্থানীয় নেতাকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। হামলায় জড়িত থাকা ও ভূমিকা রাখার অভিযোগে বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) তাদেরকে সাজা দেওয়া হয়। খবর এএফপির।

প্রতিবেদনে ফরাসি সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রাউড বয়েজের ফ্লোরিডার প্রধান জো বিগসকে রাষ্ট্রদ্রোহী ষড়যন্ত্র ও অন্যান্য অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে ১৭ বছরের জেল দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া ফিলাডেলফিয়া শহরের সশস্ত্র সংগঠনটির প্রধান জাকারে রেহলকে একই অভিযোগের জন্য ১৫ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে।

২০২০ সালের নভেম্বরে হওয়া নির্বাচনের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে হারিয়ে বিজয়ী হন জো বাইডেন। ভোটে হেরে কোনো ভিত্তি ছাড়াই বারবার কারচুপির অভিযোগ করেন ট্রাম্প। ওই নির্বাচনের ফল প্রত্যায়নের জন্য কংগ্রেসের অধিবেশন চলাকালে ট্রাম্প সমর্থকেরা ক্যাপিটলে হামলা চালান। ভোটের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার জন্য হাজার হাজার মানুষ এই হামলা চালান বলে দাবি করেন প্রসিকিউটররা।

রায়ে বিচারক টিমোথি কেলি বলেন, ‘ক্যাপিটলে এই হামলা আমাদের শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের ঐতিহ্য ভেঙে দিয়েছে। আমেরিকান হিসেবে, এই প্রথা আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিসগুলোর মধ্যে একটি।’

দোষীদের ৩৩ বছরের সাজার জন্য আবেদন করেন প্রসিকিউটররা। তবে, তাদের আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক কেলি। তিনি বলেন, ‘আক্রমণটি সন্ত্রাসী গণহত্যার ঘটনা ছিল না। বিগস বা রেহল কেউই কাউকে হত্যা করেনি। তব, এরকম কোনো ঘটনা যেন আর না হয় সেজন্য তাদের প্রতিরোধের প্রয়োজন রয়েছে।’

সামরিক অভ্যুত্থানের ন্যায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে হামলায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিল প্রাউড বয়েজ। গত ৪ মে সশস্ত্র সংগঠনটির সাবেক নেতা এনরিক তারিওকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। বিগস ও রেহল বাদেও সংগঠনটির আরেক নেতা এখান নর্দেনকে রাষ্ট্রদোহী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। তবে, আরেক নেতা ডমিনিক পেজোলাকে রাষ্ট্রদোহী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ থেকে রেহাই পান।

৩৯ বছর বয়সী বিগস ক্যাপিটল হিল দাঙ্গার দুমাস আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে বলেছিলেন, ‘বাইডেনের কাছে ট্রাম্পের হারা মানা যুদ্ধ।’ আর ৬ জানুয়ারি হামলার পর আরেক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘এটি সরকারের বিরুদ্ধে একটি সতর্কবার্তা।’

বৃহস্পতিবার সাজা ঘোষণার আগে প্রসিকিউটর জেসন ম্যাকলাফ বলেন, ‘বিগস এবং তার সহকর্মী দাঙ্গাবাজরা সেদিন কংগ্রেস বন্ধ করার ক্ষেত্রে যা করেছিল, তা একটি ভবনে বোমা হামলার চেয়ে কম নয়।’  ৬ জানুয়ারির হামলাকে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে তুলনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের লক্ষ্য ছিল, নির্বাচিতদের ভয় দেখানো।’

এ সময় বিগস আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং তিনি যা করেছেন তার জন্য অনুতাপ প্রকাশ করেন। ওয়াশিংটনের ফেডারেল আদালতে বিগস বলেন, ‘আমাকে ক্ষমা করুন। আমি স্বীকার করি, ওইদিন আমি ভুল করেছি। কিন্তু, আমি সন্ত্রাসী নই।’

বিগস ও রেহলের আইনজীবী নরম্যান প্যাটিস আদালতকে বলেন, ‘তারা হামলা চালানোর ক্ষেত্রে ট্রাম্পের নির্দেশনা অনুসরণ করেছিল।’ এই আইনজীবী প্রশ্ন করে বলেন, ‘ট্রাম্পকে কেন রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়নি?’