চীনের ‘নিখোঁজ’ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেইজিংয়ের তদন্তের মুখে, ধারণা যুক্তরাষ্ট্রের

Looks like you've blocked notifications!
চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল লি শাংফু। এএফপির ফাইল ছবি

চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল লি শাংফু ‘নিখোঁজ’ রয়েছেন। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে তাকে কোথাও প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, বেইজিংয়ের তদন্তের মুখে পড়েছেন লি শাংফু। পদচ্যুত করা হতে পারে তাকে। এ কারণেই তার কোনো খোঁজ মিলছে না। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস (এফটি)। খবর এএফপির।

সম্প্রতি জাপানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রহম ইমানুয়েল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেছিলেন, ‘লি শাংফুকে আগামী তিন সপ্তাহ জনসম্মুখে দেখা যাবে না। তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে।’ তার এ মন্তব্যের পরেই এফটির প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।

গত এপ্রিলে অন্তর্ধানে যাওয়ার পর চীনের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাংকে পদচ্যুত করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে বেইজিংয়ে সম্ভাব্য অশান্তি স্পষ্ট হয়। একই মাসে চীনের রকেট ফোর্সের সাবেক প্রধান লি ইউচাওকেও অপসারিত করা হয়। এই ফোর্স দেশটির পারমাণবিক অস্ত্রাগারের তদারকি করে। পদচ্যুত করার আগে কয়েক সপ্তাহ তাকে জনসম্মুখে দেখা যায়নি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এভাবে অপসরাণের ঘটনায় মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বেইজিং।

এফটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা বিভাগের দুজন লির বিষয়ে এমন তথ্য সামনে আনেন। তারা জানান, লি শাংফুকে প্রতিরক্ষার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে, এ বিষয়ে হোয়াইট হাউস থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

গত আগস্টে একটি নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে মস্কো গিয়েছিলেন লি শাংফু। গত ১৫ আগস্টের ওই সম্মেলনের ঠিক দুদিন পরে লির কয়েকটি ছবি প্রকাশ করে বেলারুশ সরকার। ওই ছবিতে দেখা যায়, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট  আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে বৈঠক করছেন লি শাংফু।

২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসন লি শাংফুর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হলে কোনো মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন তিনি।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের কট্টর সমালোচক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ইমানুয়েল। গত ৭ সেপ্টেম্বর বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছিলেন তিনি। এর ঠিক এক সপ্তাহ পরে ইস্যুটি নিয়ে ফের কথা বললেন তিনি। তার সর্বশেষ মন্তব্য চীনের ঊর্ধ্বতনদের পদচ্যুত করার জ্বল্পনা-কল্পনাকে আরও উসকে দিয়েছে।

গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে ইমানুয়েল লেখেন, ‘প্রেসিডেন্ট শির মন্ত্রিসভার লাইনআপ এখন আগাথা ক্রিস্টির (ইংরেজ লেখক) উপন্যাসের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। তার পরে সেখানে আর কেউ নেই। প্রথমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং নিখোঁজ হন, তারপর রকেট ফোর্সের কমান্ডাররা নিখোঁজ হন এবং এখন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শাংফুকে দুই সপ্তাহ ধরে জনসম্মুখে দেখা যায়নি।’

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) আরেক পোস্টে রাষ্ট্রদূত ইমানুয়েল লেখেন, ‘প্রথমত : প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শাংফুকে সর্বশেষ তিন সপ্তাহ ধরে দেখা যাচ্ছে না। দ্বিতীয়ত : ভিয়েতনাম সফরে গেছেন এমন কোনো তথ্য মিলছে না। তিনি সিঙ্গাপুরের নৌবাহিনী প্রধানের সঙ্গে তার নির্ধারিত বৈঠকে অনুপস্থিত। তাকে গৃহবন্দি করা হয়ে থাকতে পারে?’