ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় ১৬০ ফিলিস্তিনি নিহত

Looks like you've blocked notifications!
ছবি : এএফপি

ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার জেরে অধিকৃত গাজায় একের পর এক বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হামলায় ১৬০ ফিলিস্তিনি মারা গেছে বলে গাজায় থাকা হাসপাতাল সূত্রগুলো জানিয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুসারে, আহত হয়েছে হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। খবর আল-জাজিরার।

অন্যদিকে, ইহুদি সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে হাজার খানেক রকেট হামলার কথা জানিয়েছে হামাস। সশস্ত্র গোষ্ঠীটির হামলায় ৪০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে সাড়ে সাতশর বেশি। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে তারা। এর আগে, হামাসের হামলায় ২২ জন নিহতের কথা জানিয়েছিল ইসরায়েল।

এদিকে, ইসরায়েলের দিকে গাজা থেকে আরও রকেট হামলা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে সেখানে অবস্থানরত আল-জাজিরার সংবাদদাতা। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যমটির সংবাদ দাতা ইয়ুমনা এলসায়েদ বলেন, ‘বিমান হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে ইসরায়েল। বিভিন্ন আবাসিক ভবন লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে তারা, যা আমরা দেখেছি। বোমা হামলায় হতাহত হচ্ছে অনেকে।’

ইয়ুমনা এলসায়েদ আরও বলেন, ‘সবশেষ ১৭ বছর ধরে গাজাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। এখানকার লোকেরা কোথাও যেতে পারে না। সংঘর্ষের সময়ও তারা অঞ্চলটি ছাড়তে পারে না। অবরুদ্ধ গাজার পরিস্থিতি এমনই।’

গাজার আল-শিফা হাসপাতালে অন্তত নয়জনের মরদেহ রয়েছে। তারা সবাই হামলায় মারা গেছে। এএফপির একজন সাংবাদিক বিষয়টির প্রত্যক্ষদর্শী। অন্যদিকে, এএফপির আরেকজন সাংবাদিক দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরে আরেকজনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে দেশটির সামরিক বাহিনীর লক্ষ্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমাদের সামরিক বাহিনীর প্রধান লক্ষ্য অঞ্চলটি থেকে শত্রুবাহিনীকে নির্মূল করা। বসতির নিরাপত্তা আগের মতো করা।’ তিনি আরও বলেন, ‘সামরিক বাহিনীর দ্বিতীয় লক্ষ্য, গাজা উপত্যকায় শত্রুদের কাছ থেকে একটি চড়া মূল্য আদায় করা।’ ইসরায়েলের সকল নাগরিককে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান নেতানিয়াহু।

দুপক্ষের সংঘর্ষের জেরে ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবের রাস্তাগুলো ফাঁকা হয়ে গেছে। সেখানে থাকা এক সুইস দম্পতিকে প্রশ্ন করা হলে তারা বলেন, ‘যুদ্ধের জন্যই রাস্তাঘাট ফাঁকা।’ সংঘর্ষের জেরে একটি ফুটবল ম্যাচ স্থগিত করা হয়েছে। এমনকি, গাজা থেকে দেড়শ কিলোমিটার দূরে হাফিফায় বার্ষিক চলচ্চিত্র উৎসব বাতিল করা হয়েছে।

ইসরায়েল-হামাস সংঘর্ষ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে কাতার ও রাশিয়া। এই সংঘর্ষের জন্য ইসরায়েলকে দোষ দিচ্ছে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, চলমান সংঘর্ষের জন্য একমাত্র দোষী ইসরায়েল।  উভয় পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে তারা।

ইসরায়েলে হামলার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, ইউক্রেন, জার্মানি, ফ্রান্সসহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ। পেন্টাগন চিফ লয়েড অস্টিন বলেন, ‘আত্মরক্ষার্থে ইসরায়েলের করা হামলার পক্ষে আমরা রয়েছি। আসন্ন দিনগুলোতে প্রতিরক্ষা বিভাগ এটি নিশ্চিত করতে কাজ করবে।’

এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও শান্তি ফেরাতে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব অবসান করতে হবে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা বলছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের অবসানই এই অঞ্চলে নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও শান্তির একমাত্র গ্যারান্টি।