গাজায় সহায়-সম্বল হারিয়েছে চার লাখ ২৩ হাজার অধিবাসী : জাতিসংঘ

Looks like you've blocked notifications!
গাজায় চলছে ইসরায়েলের বিমান হামলা। ছবি : এএফপি

হামাসের হামলার পর পাল্টা আক্রমণে গাজায় বিমান থেকে বোমাবর্ষণ করেই যাচ্ছে ইসরায়েল। আর এতে চার লাখ ২৩ হাজারেরও বেশি অধিবাসী তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। খবর এএফপির।

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা ওসিএইচএ এক বিবৃতিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) পর্যন্ত আরও ৮৪ হাজার ৪৪৪ জন বেড়ে গাজায় বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা চার লাখ ৮৪ হাজার ৩৭৮ জনে পৌঁছেছে।

গত শনিবারের (৭ অক্টোবর) হামলা চালিয়ে হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের ছোট ছোট শহরগুলোতে ঢুকে পড়ে। দেশটির মরুভূমিতে আয়োজিত এক সংগীত উৎসবে অংশ নেওয়া ইসরায়েলিদের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করেন তারা। বিভিন্ন শহরে হামাসের হামলায় প্রায় এক হাজার ২০০ লোক নিহত হয়েছেন। এছাড়া হামাসেরে বন্দুকধারীরা আরও প্রায় ১৫০ জনকে অপহরণ করেন।

হামাসের প্রতি প্রতিশোধ নিতে পাল্টা হামলায় ইসরায়েল ২৩ লাখ অধিবাসী অধ্যুষিত গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনি ছিটমহলে বৃষ্টির মতো বোমাবর্ষণ করতে থাকে। এতে নিহত হন এক হাজার ৪০০ জনের বেশি। এছাড়া ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় স্থলপথে ব্যাপক আক্রমণের প্রস্তুতি নিয়েছে।

ওসিএইচএ এক বার্তায় জানায়, গাজায় আকাশ, সমুদ্র ও স্থলপথে কোনো ধরনের বিরতি ছাড়াই ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ চলছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ঘণবসতিপূর্ণ শহরটির বেশ কয়েকটি বহুতল ভবন লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয় এবং সেগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হয়।

সংস্থাটি আরও জানায়, দুই লাখ ৭০ হাজার অধিবাসী জাতিসংঘ পরিচালিত বিভিন্ন স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া ২৭ হাজার লোক আশ্রয় নিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ পরিচালিত বিভিন্ন স্কুলে। আরও প্রায় এক লাখ ৫৩ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনের বাসায়। তাছাড়া আগে থেকেই সেখানে তিন হাজার লোক উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছিলেন।

গাজার গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে ওসিএইচএ জানায়, ইসরায়েলের বোমাবর্ষণে সেখানকার দুই হাজার ৮৩৫টি আবাসিক ভবনের মধ্যে ৭৫২টি ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া আরও প্রায় এক হাজার ৮০০ বাড়িঘর এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যেগুলো মেরামত করা সম্ভব নয়।

এদিকে, গোলার আঘাতে বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংসের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা ওসিএইচএ। বিবৃতিতে তারা জানায়, ১১টি মসজিদকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে এবং ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সাতটি গির্জা ও মসজিদ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তাছাড়া হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাজার পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা। বিমান হামলায় ১১ লাখ মানুষের সেবার জন্য থাকা ছয়টি পানির কূপ, তিনটি পানির পাম্প স্টেশন, একটি জলাধার ও একটি লবণাক্ততা শোধনকারী প্ল্যান্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।