যেখানে শ্রম অধিকার লঙ্ঘন, সেখানেই নিষেধাজ্ঞা : যুক্তরাষ্ট্র

Looks like you've blocked notifications!
হোয়াইট হাউজের ফাইল ছবি এএফপির

বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের ক্ষমতায়ন, অধিকার এবং উচ্চ শ্রমমান উন্নত করতে স্মারকলিপি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) এই স্মারকলিপির শুরুতে তিনি বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান এবং আইন দ্বারা রাষ্ট্রপতি হিসেবে আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব এবং মার্কিন নীতি এবং আমাদের জাতির দৃষ্টিভঙ্গি উন্নত করতে নিজ দেশে ও বিশ্বজুড়ে শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা এবং প্রচারের জন্য এই আদেশ করা হয়েছে।’ এই স্মারকলিপি প্রকাশের পর তা নিয়ে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, এর মাধ্যমে শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার বিষয়টিকে নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তা এবং বৈদেশিক নীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি তার বক্তব্যে বাংলাদেশি এক শ্রমিক ও অ্যাক্টিভিস্ট কল্পনা আক্তারের নাম উল্লেখ করে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের পেজে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের তিন মিনিট এক সেকেন্ডের ওই ভিডিও বার্তা পোস্ট করেছে। একইসঙ্গে হোয়াইট হাউজের পোর্টালে প্রকাশিত দেশটির প্রেসিডেন্ট বাইডেনের স্মারকলিপির লিঙ্ক পোস্ট করেছে। 

ওই পোস্টে দূতাবাস ‘শক্তিশালী শ্রম অধিকার জাতীয় ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এবং কার্যকর বৈদেশিক নীতির চাবিকাঠি’ উল্লেখ করে লিখেছে, ‘ইউনিয়নগুলো মজুরি বাড়ায়, লিঙ্গ ও বেতনের ব্যবধান কমায়, উৎপাদনশীলতা বাড়ায় এবং গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে।’

পোস্ট আরও লেখা হয়েছে, ‘শ্রম কূটনীতি, অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা ও বৈদেশিক সহায়তার মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রমিক অধিকারের প্রতি সম্মান রক্ষা ও প্রচারের জন্য সরকার, শ্রমিক, শ্রমিক সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন এবং বেসরকারি খাতের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা জোরদার করবে।’

আরও লেখা হয়েছে, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্টের নতুন স্মারকলিপির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র দেশে ও বাংলাদেশে শ্রমিকদের অধিকারের অগ্রগতির জন্য উন্মুখ।’

এদিকে ভিডিও বার্তায় অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার স্মরকলিপিতে বিশ্বজুড়ে শক্তিশালী শ্রম অধিকার জাতীয় ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এবং কার্যকরের কথা তুলে ধরেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘শক্তিশালী শ্রম অধিকার জাতীয় ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এবং কার্যকর বৈদেশিক নীতির চাবিকাঠি। এটি শুধু তাদের নিজেদের ইস্যু নয়, এটি বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও বৈদেশিক নীতিবিষয়ক। এটি খুব দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।’

পরে ব্লিঙ্কেন পাঁচ উপায়ে বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় তাদের উদ্যোগের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমরা বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অধিবকার প্রতিষ্ঠায় সরকার, শ্রমিক, শ্রমিক সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন, সাধারণ জনগণ, বেসকারি সংস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত। সারা বিশ্বে আমাদের দূত ও দূতাবাসে কর্মরতরা শ্রমিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে যেন তাদের দাবি প্রতিফলিত হয়।’

ব্লিঙ্কেন আরও বলেন, ‘দ্বিতীয়ত—যারা ট্রেড ইউনিয়নের নেতা, শ্রম অধিকারকর্মী, শ্রম সংগঠনকে হুমকি দেয় তাদের জবাবদিহিতা ও শাস্তির আওতায় আনব। এরজন্য আমাদের কাছে যা আছে যেমন নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য পেনাল্টি, ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করব। আমরা বাংলাদেশি গার্মেন্টসকর্মী কল্পনা আক্তারের মতো মানুষদের কাছে যাব। কল্পনা জানিয়েছেন, শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস তার পক্ষে থাকায় তিনি বেঁচে আছেন। যখন আমরা আমাদের ভাষাকে ব্যবহার করি, যখন বিশ্বব্যাপী আমরা কাজ করি, তখন আমরা শ্রম অধিকার নিশ্চিতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারব।’

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যের শেষে জানিয়েছেন, যেসব জায়গায় সাধারণ মানুষকে জোরপূর্বক শ্রম দিতে বাধ্য করা হয় সেখান শ্রমিকদের রক্ষায় আমরা কোনো পণ্য আমদানি করব না। এটা আমাদের দেশের বৈদেশিক নীতিবিষয়ক পদক্ষেপ।’